এবার ঢাবির হল খুলে দেওয়ার দাবি ছাত্রলীগের
এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়ার আগে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও উপস্থিতি নিশ্চিত করে বিভিন্ন পরীক্ষা গ্রহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের ইনকোর্স/মিডটার্ম/টিউটোরিয়াল পরীক্ষা অনলাইনে অ্যাসাইনমেন্ট/মৌখিক/টেকহোম পদ্ধতিতে নেওয়া হবে বলা হয় এবং জানানো হয়, অগ্রাধিকারভিত্তিতে অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের পরীক্ষাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিভাগ/ইনস্টিটিউট থেকে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার সময়সূচি জানতে পারবে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রয়োজনে পরীক্ষাগুলো তুলনামূলক কম বিরতিতে বা একইদিনে দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময়কাল হবে বিদ্যমান নির্ধারিত সময়ের অর্ধেক। একইভাবে ল্যাবকেন্দ্রিক ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে।
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একাডেমিক কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত না করেই স্নাতক সমাপনী বর্ষ ও স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছে। সেশনজট নিরসন এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জরুরি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য হলে থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে এ ধরনের সিদ্ধান্তগ্রহণ একপাক্ষিক, শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিপ্রতীপ, বিদ্যমান বাস্তবতায় অনুপযুক্ত সমাধান এবং কোনো অবস্থাতেই অভিভাবকসুলভ নয়। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থী ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের জন্য এটি স্পষ্টতই অনভিপ্রেত এবং করোনাকালীন বাস্তবতায় আর্থিক সক্ষমতার বাইরে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই প্রস্তাবনায় শিক্ষার্থীদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি, সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত হয়নি এবং হলে থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের অধিকারের সুরক্ষা দেওয়া হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই সংকট-প্রতিবন্ধকতা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির ঐতিহ্যিক ধারায় দায়বদ্ধ।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, পরীক্ষার্থীদের জন্য হল উন্মুক্ত করে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে, সঠিক রুপকল্প ও বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষা গ্রহণ করা বাস্তবসম্মত, ন্যায়ানুগ এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদার জন্য উত্তম সমাধান। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই, অনতিবিলম্বে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ-প্রত্যাশা-অধিকারের আলোকে হল খুলে দিয়ে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে পরীক্ষা গ্রহণের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যে নিরন্তর সংগ্রাম তাতে অরুণ প্রাতের তরুণ দল শিক্ষার্থী বন্ধুদের সুশিক্ষা ও সুকর্মসংস্থানের উপযোগী করে প্রস্তুত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সর্বদা নেতৃত্বদানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।