কোনো ধর্ম সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না : প্রধানমন্ত্রী
কোনো ধর্মই সংঘর্ষ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সমর্থন করে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাঁর সরকার কোনো সংঘর্ষ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ চায় না। বরং সরকার চায় সব ধর্মের মানুষ তার নিজ বিশ্বাস ও মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এবং ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বার্তা সংস্থা বাসসের এক খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সব সদস্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো ধর্মই সংঘর্ষ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সমর্থন করে না। কিছু লোকের মধ্যে খারাপ মনোভাব রয়েছে। ফলে আমরা চাই জনগণ কুপ্রবৃত্তি থেকে মুক্ত থাকবে। তারা একে অন্যকে সম্মান দেবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই বিশ্বাসই সবার জন্য সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারে।’
মন্দিরে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি ধর্মের লোক এই দেশে ভ্রাতৃত্বের চেতনায় এক সঙ্গে বসবাস করছে। আপনারা সবাই এই মাটির সন্তান। সুতরাং আপনারা আত্মবিশ্বাস ও মর্যাদার সঙ্গে এখানে বসবাস করবেন।’
সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তাঁর সরকার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনগণের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধানের চার মৌল নীতির অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।’
দেশে খুবই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপিত হচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্গাপূজার এই উৎসবে অন্য ধর্মের লোকরাও যোগ দিচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব উদযাপনে সহযোগিতা করার জন্য তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্য ও স্থানীয় জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এবং ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শনের সময় আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দেব, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক।
এ ছাড়া রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ মিশনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।