ফখরুলের কিছু হলে দায় সরকারের : বিএনপি
গুরুতর অসুস্থ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পুনরায় কারাগারে পাঠানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তাঁর দল। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাস্থ্য সংকটে পড়ে গেলে, সেই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দেশবাসী দায়ী করবে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার মহানগর হাকিম মারুফ হোসেনের আদালতে নাশকতার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আত্মসমর্পণ করেন। এরপর আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর পরই রাজধানীর নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন। এ সময় তিনি মির্জা ফখরুল ইসলামের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক দিন ধরেই অসুস্থ। তাঁর হৃদরোগসহ ঘাড়ে ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক রয়েছে। এ বছর প্রায় ছয় মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন দেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে কয়েক দফা চিকিৎসা নেন। কিন্তু তাঁর ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লকটির অবস্থান খুবই জটিল হওয়ায় তা শৈল্য চিকিৎসার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় তাঁর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি।
মির্জা ফখরুল ২৪ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য যাওয়ার কথা ছিল উল্লেখ করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘তাঁর মতো দলের বেশ কয়েকজন প্রবীণ-বয়োবৃদ্ধ নেতাও অনুরূপভাবে মিথ্যা মামলায় জর্জরিত এবং অনেকেই অন্তরীণ কারাগারে। তার মধ্যে বিশেষ করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নানের নাম অবশ্যই উল্লেখ করার মতো। এর বাইরেৱ দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় কারারুদ্ধ।’
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জটিল রোগে আক্রান্ত একজন মানুষ। কারান্তরীণ অবস্থায় তাঁর স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে বলে চিকিৎসকরা অভিমত দিয়েছেন। এর আগেও কারাগারে থাকাকালে ফখরুল ইসলাম আলমগীর কয়েক দফা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং তাঁর শারীরিক ওজন তখন ১৬ কেজি হ্রাস পেয়েছিল।
‘সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে রাজনীতি করবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়। কিন্তু কাউকে তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হবে অত্যন্ত অমানবিক।’
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ‘সরকার ছায়ার সঙ্গে শত্রু শত্রু খেলায় লিপ্ত। বিরোধী দল, বিরোধী দলের নেতাদের অকারণেই তারা শত্রু ভাবছেন। অথচ বিরোধী দলের নেতারা ও বিরোধী দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। অথচ সেই প্রতিষ্ঠানটিকেই সরকার ধ্বংস করার এক আত্মঘাতী কাজে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে।’