রাত ৯টা পর্যন্ত দোকানপাট-শপিংমল খোলা
‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ মধ্যেই মালিক ও কর্মচারীদের দাবির মুখে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই আজ থেকে ১০টা-৫টা দোকান খোলার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সরকার। এবার দোকান খোলা রাখার সেই সময় বাড়িয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
রোববার রাতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমি ডিএমপি কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলামকে ফোন করেছিলাম। তিনি আমাকে দোকানপাট খোলা রাখার সময় বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন।’
‘কমিশনার আরও জানিয়েছেন, সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা যাবে। সুতরাং আমরা আগামীকাল সোমবার সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখব’, যোগ করেন হেলাল উদ্দিন।
বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানাও রাতে এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় শাখার উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে দোকানপাট ও শপিংমল খোলার কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ব্যাপক সংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয় বিবেচনা করে রোববার থেকে দোকানপাট-শপিংমল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে খোলা রাখা যাবে। বিধি প্রতিপালনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাজার বা সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ কমাতে গত ৫ এপ্রিল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। তবে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংক ইত্যাদি খোলার রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এর একদিন পরে রাস্তায় গণপরিবহনের সংকট দেখা দিলে ৭ এপ্রিল থেকে সিটি করপোরেশন এলাকা গণপরিবহণ চলার অনুমতি দেয় সরকার।
পরে সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল সকাল থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর বিধি-নিষেধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তা ২১ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর আগে করোনা মোকাবিলায় জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি বৈঠক করে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহে উন্নীত করার সুপারিশ করে। সেই আলোকে আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধি-নিষেধ বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। পরে তা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পায়।
কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপের পর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকান মালিকেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলা রাখার অনুমতি চেয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন। সরকার তা বিবেচনায় নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এমন এক সময়ে সরকার এই দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, যখন দেশে করোনা পরিস্থিতি গত এক বছরের মধ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। টানা কয়েকদিন ধরে প্রায় একশ জনের মৃত্যু হচ্ছে।
করোনা শুরুর পর থেকে এখন সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ হাজার ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া দেশে নতুন করে আরও দুই হাজার ৯২২ জন আক্রান্ত হয়েছে।