যত তাড়াতাড়ি শেষ করা যায়, তত ভালো : আফগানিস্তান প্রসঙ্গে বাইডেন
কাবুল থেকে সরিয়ে আনার কার্যক্রম ৩১ আগস্টের সময়সীমার মধ্যেই শেষ করার সিদ্ধান্তে অনড় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর জোট জি-৭ অন্তর্ভুক্ত নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন, ‘যত তাড়াতাড়ি আমরা শেষ করব, তত ভালো।’ বিবিসির প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো মিত্র শক্তিরা চাইছিল যেন প্রত্যাহারের সময়সীমা বাড়ানো হয়। এবং তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করে যেন এ বিষয়ের সুরাহা করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তালেবানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও জানিয়েছে। কিন্তু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৩১ আগস্টের মধ্যে ফিরিয়ে আনার কাজ শেষ করার কথাই জানালেন।
জি-৭ বৈঠক শেষে বাইডেন বলেছেন, ‘লোকজনকে সরিয়ে আনার কাজে তালেবানও সহায়তা করছে। আন্তর্জাতিক মহল তালেবানকে তাদের কর্মকাণ্ড দেখে বিচার করতে পারে। বিমানবন্দর থেকে লোকজন নিয়ে আসার কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। কারণ, আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেটের হামলার আশঙ্কা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে যত বেশি সময় থাকবে, হামলার হুমকি ততই প্রকট হতে থাকবে।’
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গতকাল মঙ্গলবার আফগানিস্তান প্রসঙ্গে আলোচনা করতে জি-৭-এর জরুরি বৈঠকে বসেন। ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত হন এসব দেশের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীরা।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লোকজনকে কাবুল থেকে সরিয়ে আনার কাজ করে যাবে তাঁর দেশ যুক্তরাজ্য। সময়সীমার পরও আফগানদের কেউ দেশ ছাড়তে চাইলে তালেবান যেন সুযোগ দেয়, তালেবানের প্রতি এমন আহ্বান জানান তিনি।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুযায়ী যতটা সুযোগ পাওয়া যায় আফগানদের সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’
অন্যদিকে, গতকাল তালেবান জানিয়েছিল—তারা ৩১ আগস্টের সময়সীমা পার হতে দেবে না। তাদের ভাষ্য, এরপরেও আফগানিস্তানে বিদেশি সেনা অবস্থান মানে হচ্ছে, দখলদারিত্বের সময়সীমা বাড়ানো। এর পরিণতিও ভাল হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সশস্ত্র সংগঠনটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ।
গত ১৫ আগস্ট তালেবানের কাবুল দখলের দিন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৭০ হাজার ৭০০ জনকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের সেনা, কূটনীতিক ও আফগানরা রয়েছেন।
তালেবানের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে বহু আফগান দেশত্যাগের জন্য কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় জমাচ্ছেন। তাঁদের বেশির ভাগই টানা দুই দশকের যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি সেনাদের সঙ্গে বিভিন্ন কাজে জড়িত ছিলেন।
আজ বুধবার পর্যন্ত কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ছয় হাজার এবং যুক্তরাজ্যের এক হাজারের বেশি সেনা রয়েছে। এ ছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি ও তুরস্কসহ ন্যাটো সদস্য দেশেরও কিছু সেনা এখনও কাবুলে রয়েছে।