খেলোয়াড়দের ওপর চাপ : যা বললেন ডমিঙ্গো
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্প্রতি রাসেল ডমিঙ্গোকে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কোচের পদ থেকে বাদ দিয়েছে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ দল ১৩টি ম্যাচ খেলেছে, এর মধ্যে মাত্র দুটি ম্যাচ জিতেছে, একটি পরিত্যক্ত হয়। নতুন-নিযুক্ত টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ভারতীয় শ্রীধরন শ্রীরাম।
বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ডমিঙ্গোর দর্শন সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের উপযুক্ত নয়। অন্যদিকে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস মনে করেন, বাংলাদেশ কোচের মধ্যে আক্রমণাত্মক মানসিকতার অভাব রয়েছে।
আজ বুধবার দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে ক্রিকবাজ জানিয়েছে, বিসিবির সিদ্ধান্তে মোটেও হতাশ নন ডমিঙ্গো। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা বাইরের চাপ সামলাতে পারছে না বলেই সবকিছু হাতের বাইরে চলে যায়।
এ ব্যাপারে ডমিঙ্গো বলেন, ‘প্রত্যেকেরই নিজস্ব মতামত আছে। এটা হতাশাজনক যে তারা (বিসিবির কর্মকর্তা) অন্যদেরকে বলেছে, কিন্তু আমাকে কিছুই জানায়নি। মানুষের কাছ থেকে আমি শুনেছি। কিন্তু আমি টি-টোয়েন্টির পরফরম্যান্স নিয়ে খুশি। আমি কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত নই। আমি বলব না যে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম (ছাড়ের পর)। তবে একজন কোচ হিসাবে আপনাকে সবকিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যদি দল ব্যর্থ হয় আপনি ভবিষ্যতের গ্যারান্টি দিতে পারবেন না। আমি জানি দল নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। বিবেচনা করে যে এটি (টি-টোয়েন্টি থেকে আমার অপসারণ) সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল না।’
ডমিঙ্গোর অধীনে ৪৬টি টি-টোয়েন্টির মধ্যে বাংলাদেশ মাত্র ১৯টি ম্যাচ জিতেছে। যেখানে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ৪-১ এবং ৩-২ ব্যবধানে জিতেছে। মিরপুরের উইকেটে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় খুব কমই লাভ করেছে। যেহেতু দল সুপার টুয়েলভ রাউন্ডের সব ম্যাচ হেরেছে, এর পরেই পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাদের সিরিজ হেরেছে।
এ সম্পর্কে বাংলাদেশ টেস্ট ও ওয়ানডে দলের কোচ বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা ভালো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছি। ২০২১ সালের বিশ্বকাপে ছেলেরা বাইরের চাপ সামলাতে পারেনি। মূল পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এবং পরবর্তীতে বিশ্বের তিনটি শীর্ষস্থানীয় দল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া উচিত ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা আমাদের বিরুদ্ধে জিতেছিল। এরপর আমাদের কোনো আত্মবিশ্বাস ছিল না। পরে আমরা ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয়েছিলাম। তখন থেকেই সবকিছু বদলে যায়। নির্বাচকরা দল পরিবর্তন করে। বাইরে প্রচুর উত্তেজনা ছিল।’
‘আপনি যদি খেলোয়াড়দের কঠোর সমালোচনা করেন, তবে আপনি তাদের কাছ থেকে সেরাটা পাবেন না। আমি তা চাইনি। কারণ ক্রিকেটারদের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার জন্য সময় প্রয়োজন। কিন্তু তারা তা করতে পারে না, কারণ তাদের সবসময় তিরস্কার করা হয়। ছেলেরা এতে এতটাই অভ্যস্ত যে তারা সবসময় অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকে।’
ডমিঙ্গো আরও বলেন, ‘আপনি ক্রিকেটারদের জিজ্ঞেস করতে পারেন, আমি ড্রেসিংরুমে একটি শান্ত পরিবেশ রাখতে চেয়েছিলাম এবং ক্রিকেটারদের স্বচ্ছতার সাথে এগিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সব সময় আমাকে বলা হয়েছে আপনার প্রয়োজন। তাদের ওপর চাপ দিন, আপনাকে কঠোর হতে হবে।’