জিম্বাবুয়েতে হার দেখল বাংলাদেশ
একমাত্র টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টিতেও উড়ন্ত জয়ে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারল না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে হার দেখল বাংলাদেশ। বাজে ফিল্ডিং ও ব্যাটিং ব্যর্থতায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের কাছে ২৩ রানে হারল বাংলাদেশ। চলতি জিম্বাবুয়ে সফরে এটিই বাংলাদেশের প্রথম হার।
আজ শুক্রবার সিরিজে টিকে থাকার মিশনে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ১৬৬ রান সংগ্রহ করেছে জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নেমে ১৪৩ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। এবার দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরল জিম্বাবুয়ে। তিন ম্যাচের সিরিজের শেষটি হবে শিরোপা নির্ধারণী। আগামী রোববার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জয়ের জন্য লড়বে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে।
হারারের স্পোর্টস ক্লাবে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৬৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে থেকেই নড়বড়ে ছিল বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের দুই হাফসেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ নাঈম ও সৌম্য সরকার দুজনেই আজ দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ। ৮ বলে ৫ রান করে ফেরেন নাঈম। আর সৌম্য ৭ বলে করেন ৫ রান।
তিনে নামা মেহেদী হাসান ১৯ বলে করেন ১৫ রান। বিপদে পড়া দলকে উদ্ধার করতে পারেননি সাকিব আল হাসানও। ১০ বলে ১২ রান করে বিদায় নেন তিনি। এরপর বাকি সময় শুধু হতাশাই দেখিয়েছে বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৪৩ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
এদিন টসের ভাগ্য জিতেছে জিম্বাবুয়ে। বরাবরের মতো ব্যাটিং নিয়েছে তারা। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমেই শুরুতেই হোঁচট খাঁয়। বাংলাদেশি বোলার মেহেদী হাসান বোল্ড করে ফিরিয়ে দিয়েছেন স্বাগতিক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে (৩)।
মারুমানি ফেরার পর দ্বিতীয় উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি সাকিব আল হাসান। নিজের স্পেলে এসেই তুলে নিলেন জিম্বাবুয়ের শক্ত উইকেট চাকাভাকে।
সাকিবের করা অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল টেনে খেলার চেষ্টা করেন চাকাভা। কিন্তু টাইমিং ঠিক হয়নি। বল চলে যায় মিড অফে। সেখানে থাকা শরিফুল হাতের মুঠোয় ক্যাচ জমান। ৯ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ১৪ রান করেন চাকাভা।
এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ওয়েসলি মাধেভেরে ও ডিওন মায়ার্স। তৃতীয় উইকেটে তাদের জুটির পঞ্চাশ এসেছে ৪২ বলে। এ ছাড়া ৪৫ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মাধাভেরে। থিতু হয়ে যাওয়া এই জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন শরিফুল।
তবে মাধেভেরেকে ফেরাতে পারেননি। আউট করেছেন মায়ার্সকে। শরিফুলের করা অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে উপরে উঠিয়ে দেন মায়ার্স। ডিপ পয়েন্টের ফিল্ডার মেহেদি হাসান ক্যাচ নিতে ভুল করেননি। ২১ বলে ২৬ রান করেন মায়ার্স। ভাঙে ৫৭ রানের জুটি।
মায়ার্স ফিরলে কিছুক্ষণ মাধেভেরেকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেন সিকান্দার রাজা। সেই রাজা কাটা পড়েন রান আউটে। সরাসরি থ্রোয়ে সিকান্দার রাজাকে রান আউট করেন সৌম্য সরকার।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে থিতু হয়ে যাওয়া মাধেভেরের উইকেট শেষ পর্যন্ত পান শরিফুলই। ১৮তম ওভারে শরিফুলের বল মোকাবিলা করতে গিয়ে আফিফের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মাধেভেরে। ফলে ৫৭ বলে ৭৩ রানে শেষ হয় মাধেভেরের প্রতিরোধ। মাধেভেরে ফিরলে শেষ পর্যন্ত ১৬৬ রানে থামে জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধ।
একমাত্র টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টিতেও উড়ন্ত জয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টির প্রথমটিতে জয় দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশ আজ শুক্রবার সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে নেমেও পারল জিততে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে : ২০ ওভারে ১৬৬/৬ (মাধেভেরে ৭৩, মারুমানি ৩, চাকাভা ১৪, মায়ার্স ২৬, রাজা ৪, বার্ল ৩৪, জঙ্গুয়ে ২; সাইফ ৪-০-৩৬-০, তাসকিন ৪-০-২৮-০, সাকিব ৪-০-৩২-১, শরিফুল ৪-০-৩৩-৩, সৌম্য ২-০-১৬-০, শামীম ১-০-৭-০, মেহেদী ১-০-১১-১)।
বাংলাদেশ : ১৯.৫ ওভার ১৪৩/১০ (নাঈম ৫, সৌম্য ৮, মেহেদী ১৫, সাকিব ১২, মাহমুদউল্লাহ ৪, আফিফ ২৪, নুরুল ৯, শামীম ২৯, সাইফউদ্দিন ১৯, তাসকিন ৫, শরিফুল ০ ; মুজারবানি ৪-০-২১-২, চাতারা ৪-০-৩৪-২, মাসাকাদজা ৪-০-২০-৩, মাধেভেরে ১-০-১৬-০, সিকান্দার ৩-০-২২-০)।
ফল : ২৩ রানে জয়ী জিম্বাবুয়ে।