তাইজুল-খালেদে দিন শেষে কিছুটা স্বস্তি বাংলাদেশের
ডারবান টেস্টে হারের ক্ষত এখনো তরতাজা। চার দিন লড়াইয়ে টিকে থেকেও পঞ্চম দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে স্রেফ উড়ে যায় বাংলাদেশ। ওই টেস্টের হাতাশা নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের প্রথম দিন ভালোয়-মন্দে পার করল। তাইজুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদের ভালো বোলিংয়ের পরও প্রথম দিন ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে শক্ত রান জমা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের রানের চাপ মাথায় নিয়ে টেস্টের প্রথম দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৭৮ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিন শেষে উইকেটে কাইল ভেরাইনা ১০ রানে অপরাজিত। তাঁর সঙ্গে আছেন মুল্ডার। দিনের প্রথম সেশনে মাত্র এক উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে নিয়েছে দুটি উইকেট। আর শেষ সেশনে নিয়েছে দুটি উইকেট। কিন্তু রানের কথা চিন্তা করলে বাংলাদেশের কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। কারণ প্রথম দিনই দলীয় রান প্রায় তিনশর কাছাকাছি করে নিয়েছে ডিন এলগারের দল। কাল সেটা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই যতদ্রুত সম্ভব স্বাগতিকদের কাল থামানো চাই বাংলাদেশের।
প্রথম সেশন
টস হেরে ফিল্ডিং নামা বাংলাদেশ ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই উইকেট পেতে পারত। দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার সারেল এরউইয়ার বিপক্ষে এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদন তোলেন বাংলাদেশি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। এরপর তিনি অধিনায়ক মুমিনুল হককে রিভিউ নিতে বলেন। কিন্তু, কেউ একজন জিজ্ঞাসা করেন ব্যাটে-বলের স্পর্শ হয়েছে কি-না। তাতে খালেদ নেতিবাচক আভাস দেন।
এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ১৫ সেকেন্ড সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। বাংলাদেশও সুযোগ হারায়। কারণ, টিভি রিপ্লেতে পরে দেখা যায়, ব্যাটে-বলের স্পর্শ ছিল না। বল সরাসরি আঘাত হানতো লেগ স্টাম্পের ওপরের দিকে। তাতে বেঁচে যান এরইউয়া। তখন উইকেটে ৪ রানে ছিলেন প্রোটিয়া তারকা। এরপর অবশ্য সেই খালেদেই কাটা পড়েন এরউইয়া। প্রোটিয়াদের দলীয় ৫২ রানে কট বিহাইন্ড করে এরউইয়াকে ফেরান খালেদ। ৪ রানে জীবন পাওয়া এরউইয়া ৪০ বলে ২৪ রান করে বিদায় নেন। প্রথম সেশনে এই একটি উইকেটই পায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশন
এই সেশনে প্রোটিয়াদের দুই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। দুটি উইকেটই পান তাইজুল ইসলাম। ওপেনিংয়ে নেমে যাওয়া ডিন এলগারকে নিজের প্রথম শিকার বানান একাদশে ফেরা তাইজুল। বাংলাদেশি স্পিনারের বল থার্ড ম্যান দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন এলগার। কিন্তু ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় লিটন দাসের গ্লাভসে। এলগারের বিদায়ে ভাঙে ৮১ রানের জুটি। ৮৯ বলে ১০ চারে ৭০ রান করে সাজঘরে ফেরেন এলগার। এর মাঝে বৃষ্টি নামে। ২৪ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর ফের মাঠে নামে দুদল। বৃষ্টির পর কিগান পিটারসেনের উইকেট তুলে নেন তাইজুল। পিটারসেনকে এলবির ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন এই স্পিনার। ১৮৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১২৪ বলে ৬৪ রান করে বিদায় নেন পিটারসেন।
তৃতীয় সেশন
প্রথম দুই সেশনে মাত্র তিন উইকেট পায় বাংলাদেশ। সঙ্গে বাড়ে রানের চাপও। তাই শেষ সেশনে উইকেট নেওয়ার খোঁজেই ছিল বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় সেশনে জমে যায় তেম্বা বাভুমা ও রায়ান রিকেলটনের জুটি। এই জুটি লম্বা সময় ধরে ভোগায় বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙেন তাইজুলই। ৪২ রানে আউট করেন রিকেলটনকে। এরপর বাভুমাকে ৬৭ রানে খালেদ বিদায় করলে অন্তত কিছুটা স্বস্তি পায় বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর দক্ষিণ আফ্রিকা
প্রথম ইনিংস : ৯০ ওভারে ২৭৮/৫ (এলগার ৭০, এরউইয়া ২৪, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, রিকেলটন ৪২, ভেরাইনা ১০*, মুল্ডার ০*; তাইজুল ৩২-৭-৭৭-৩, ইবাদত ১৬-২-৭৫-০, মিরাজ ১৯-২-৫৮-০, খালেদ ৩০-৪-৫৯-২)।