মাঠের বিতর্ককে মিরাজ বললেন ‘দুষ্টুমি’
বিপিএলের সপ্তম ম্যাচ চলাকালীন সাকিব আল হাসানের মাঠে ঢুকে যাওয়ার ইস্যুতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ফরচুন বরিশালের ইনিংস শুরুর আগে স্ট্রাইক রেট নিয়ে ঝামেলায় জড়ান অধিনায়ক সাকিব। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঘুরে ফিরে আসে সেই প্রসঙ্গ। দলের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মেহেদী হাসান মিরাজ বিষয়টিকে, নুরুল হাসান সোহানের ‘দুষ্টুমি’ বলেই উল্লেখ করলেন।
ম্যাচ জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘তখন আমাদের ডানহাতি-বাঁহাতি ব্যাটার উইকেটে ছিল। যেহেতু শেখ মেহেদী শুরু করার কথা তাই আমাদের বাঁহাতি ব্যাটার চাতুরাঙ্গা স্ট্রাইকে ছিলেন। সাকিব ভাই তখন বাইরে থেকে বলছেন, যেন ডান হাতি ব্যাটার স্ট্রাইক নেয়, নিলে একটা অ্যাডভান্টেজ পাবেন। কারণ এখানে এক-দুইটা বল খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাকিব ভাই বাইরে থেকে এটাই বলছিলেন। তারপর যখন আবার বিজয় ভাই স্ট্রাইকে আসছে, ওরা আবার বাঁহাতি বোলার নিয়ে এসেছে। তখন আবারও বদলাচ্ছিল। জিনিসটা ওরকম ছিল। কিন্তু এটা যে অনেক কিছু এরকম কিছু না। ওরাও অ্যাডভান্টেজ নিতে চাচ্ছিল, হয়তো দুষ্টামি করছিল সোহান ভাই ওই সময়ে।’
মিরাজ জানালেন, আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলে নাকি সাকিব মাঠে প্রবেশ করেন। মিরাজের কথায়, ‘একটা জিনিস দেখেন, পরিস্থিতি এমন ছিল; বিজয় ভাইকে যখন সাকিব ভাই বলছিলেন, তখন কিন্তু আম্পায়ারের সঙ্গে কথা হচ্ছিল তাঁর (সাকিবের)। অধিনায়ক তো মাঠে যেতে পারে। অনেক সময় যেতে পারে না? আম্পায়ারের সঙ্গে তো তখন তিনি কথা বলেছেন। এখানে যে আম্পায়ার ছিল, থার্ড আম্পায়ার (আসলে চতুর্থ) সঙ্গে আগে কথা বলছেন।’
আম্পায়ারের সঙ্গে সাকিবের কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে মিরাজ বলেন, ‘আম্পায়ারের সঙ্গে যে কথা হয়েছে, তখন তো খেলা চলছিল, খেলার ভেতর ঢুকে গিয়েছিলাম। ড্রেসিং রুমে কোনো আলোচনা হয়নি। ওরকম কথা হয়নি।’
মূলত ঘটনাটি ঘটে স্ট্রাইক নিয়ে। নিয়ম অনুসারে বোলার ঠিক করার পর ব্যাটাররা স্ট্রাইক নিয়ে থাকেন। কিন্তু সেখানে ঝামেলা পাকায় রংপুর। ইনিংসের প্রথম ওভার দেওয়া হয় রংপুর রাইডার্সের বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানকে। সে সময় স্ট্রাইকে ছিলেন চাতুরাঙা ডি সিলভা। তখনই বোলার বদলান রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। তিনি বল তুলে দেন অফস্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের হাতে।
এটা দেখে স্ট্রাইক পরিবর্তন করে ননস্ট্রাইকপ্রান্তে চলে যান চাতুরাঙা। সোহানও ফের বোলার পরিবর্তন করেন। এবার আনেন রাকিবুলকে। বিষয়টি ডাগআউট থেকে লক্ষ্য করেন সাকিব। সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানান।
বরিশালের ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে প্রথমে বাউন্ডারি রোপের কাছে দাঁড়িয়ে নিজের ব্যাটারদের উঠে আসার আহ্বান জানান। ঘটনা সামাল দিতে এগিয়ে যান চতুর্থ আম্পায়ার মোজাহিদুজ্জামান। কিন্তু শান্ত করতে পারনেনি। সাকিব সরাসরি মাঠে ঢুকে যান। দুই ওপেনারকেই ফিরে আসতে বলেন। দুই অনফিল্ড আম্পায়ার গাজী সোহেল ও রাভেন্দ্র উইমালসারি সাকিবকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। সোহানকেও কথা বলতে দেখা যায় সাকিবের সঙ্গে। পরে বুঝিয়ে শুনিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরত পাঠানো হয় সাকিবকে। কিন্তু ঘটনাটি ভালোই উত্তেজনা সৃষ্টি করে শেরেবাংলায়। এর জন্য ইনিংশ শুরু হতেও বিলম্ব হয়।