সেই মিরপুরেই বিশাল হারের হতাশা
বাংলাদেশ সফরে একের পর এক ম্যাচে শুধু হারতে হয়েছে পাকিস্তানকে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তিনটি ওয়ানডেতেই হতাশ হতে হয়েছে সফরকারীদের। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই হেরে গেছে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। সম্ভাবনা জাগিয়েও জয়ের দেখা পায়নি প্রথম টেস্টে। খুলনা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে রেকর্ডগড়া উদ্বোধনী জুটি গড়ে পাকিস্তানকে জয়বঞ্চিত করেছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। তবে ঢাকায় ফিরে আর হতাশ হতে হলো না সফরকারীদের। মিরপুরে শেষ টেস্টে জিতে কিছুটা সান্ত্বনা পাচ্ছেন মিসবাহ-হাফিজ-আজহাররা। প্রায় দেড় দিন হাতে রেখেই পাকিস্তান পেয়েছে ৩২৮ রানের বড় জয়।urgentPhoto
খুলনা টেস্টের প্রথম ইনিংস শেষেও বাংলাদেশ পড়েছিল চাপের মুখে। পিছিয়ে ছিল ২৯৬ রানের বড় ব্যবধানে। কিন্তু সেখান থেকেই দারুণ দৃঢ়তায় ঘুরে দাঁড়িয়ে টেস্টটা ড্র করেছিল স্বাগতিকরা। ঢাকায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও খুলনা থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। কিন্তু এবার আর সফল হতে পারেনি মুশফিক বাহিনী। ৫৫০ রানের দুরূহ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২২১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।
১ উইকেটে ৬৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরুর পর প্রথম আট ওভার নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও মুমিনুল। কিন্তু নবম ওভারে আঘাত হানেন পেসার ইমরান খান। আউট করেন ৪২ রান করা তামিমকে। মাত্র সাত রানের জন্য হাবিবুল বাশারকে টপকে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক হতে পারেননি এই বাঁ-হাতি ওপেনার। তিন ওভার পর মাহমুদউল্লাহও (২) ইমরানের ‘শিকার’। বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি প্রথম ইনিংসে ৮৯ রান করে অপরাজিত থাকা সাকিবও। মোহাম্মদ হাফিজের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ধরা পড়েছেন ওয়াহাব রিয়াজের হাতে। টেস্টের এক নম্বর অলরাউন্ডারের এবার অবদান ১৩ রান।
এরপর প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ইয়াসির শাহর বলে বোল্ড হয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে ১২ রান করলেও এবার রানের খাতা খুলতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। টানা দুই ওভারে সৌম্য সরকার ও মুমিনুলকে আউট করেছেন ওয়াহাব রিয়াজ ও ইয়াসির। সৌম্য ফিরেছেন মাত্র ১ রান করে। শুভাগতর ৩৯ রান ২০০ পার করিয়েছে বাংলাদেশকে।
দলের বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যেও দারুণ এক কীর্তি গড়েছেন মুমিনুল। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৩ রানে আউট হয়ে গেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম অর্ধশতক। টানা ১১ ম্যাচে অন্তত একটি অর্ধশতক করে নাম লিখিয়েছেন ভিভ রিচার্ডসের মতো কিংবদন্তির পাশে।
ঢাকা টেস্টের পুরোটাই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথম দিনেই হাঁটুতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন পেসার শাহাদাত হোসেন। ফলে গুরুত্বপূর্ণ একজন বোলারের সহায়তা পায়নি বাংলাদেশ। ব্যাটিংও করেছেন ১০ জন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ৫৫৭/৮ ডিক্লে. (হাফিজ ৮, সামি ১৯, আজহার ২২৬, ইউনিস ১৪৮, মিসবাহ ৯, শফিক ১০৭, সরফরাজ ২১*, ওয়াহাব ৪, ইয়াসির ০; তাইজুল ৩/১৭৯, শহীদ ২/৭২, শুভাগত ২/৭৬, সাকিব ১/১৩৬)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২০৩ (তামিম ৪, ইমরুল ৩২, মুমিনুল ১৩, মাহমুদউল্লাহ ২৮, সাকিব ৮৯*, মুশফিক ১২, সৌম্য ৩, শুভাগত ০, তাইজুল ১৫, শহীদ ১; ইয়াসির ৩/৫৮, ওয়াহাব ৩/৭৩, জুনায়েদ ২/২৬, হাফিজ ১/১৩)
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ১৯৫/৬ ডিক্লে. (হাফিজ ০, সামি ৮, আজহার ২৫, ইউনিস ৩৯, মিসবাহ ৮২, শফিক ১৫, সরফরাজ ১৮*; শহীদ ২/২৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৮, শুভাগত ১/১৮, সৌম্য ১/৪৫, তাইজুল ১/৫৬)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ২২১ (তামিম ৪২, ইমরুল ১৬, মুমিনুল ৬৮, মাহমুদউল্লাহ ২, সাকিব ১৩, মুশফিক ০, সৌম্য ১, শুভাগত ৩৯, তাইজুল ১০, শহীদ ১৪*; ইয়াসির ৪/৭৩, ইমরান ২/৫৬, হাফিজ ১/৩, ওয়াহাব ১/৩৬, জুনায়েদ ১/৪৫)
ফল : পাকিস্তান ৩২৮ রানে জয়ী
সিরিজ : পাকিস্তান ১-০ ব্যবধানে জয়ী
ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা : আজহার আলী।