অ্যাশেজ
এজবাস্টনে প্রথম দিনে লড়াই সমানে সমান
গত এক বছরে ইংল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেটটা খেলছে আগ্রাসী ঢংয়ে। মাঠে নামো আর স্ট্রাইক ঠিক রেখে আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে খেলো। এর ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারের অ্যাশেজের প্রথম দিনও।
শুক্রবার (১৬ জুন) থেকে শুরু হয়েছে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার অ্যাশেজ সিরিজ। যার প্রথম দিনই ব্যাট করতে নেমে থেমেছে ইংল্যান্ড। তবে মজার ব্যাপার হলো, ইংলিশরা থামার আগে ঠিকই স্কোরবোর্ডে পেয়েছে শক্ত পুঁজি। এর কারণ তাদের আগ্রাসী ব্যাটিং।
টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৭৮ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৯৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। জবাবে দিনের শেষ সময় মাঠে নেমে চার ওভারে বিনা উইকেট হারিয়ে ১৪ রানে দিন শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। ৩৭৯ রানে পিছিয়ে থেকে শনিবার দ্বিতীয় দিন শুরু করবে অসিরা।
এদিন ঘরের মাঠ এজবাস্টনে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস। ইনিংসের শুরুটা চার মেরে করেন জ্যাক ক্রলি। কিন্তু ক্রলির সেই শুরুর পরেও দ্রুতই ভাঙে ওপেনিং জুটি। ২২ রানে ওপেনার বেন ডাকেটকে (১২) উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারির ক্যাচ বানিয়ে ফেরান জস হ্যাজেলউড। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ওলে পোপকে সঙ্গে নিয়ে ৭০ রানের জুটি গড়েন ক্রলি। ৩১ রান করে নাথান লায়বের স্পিন ঘূর্ণিতে পোপকে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন পোপ।
এরপর ক্রিজে আসেন জো রুট। ছিলেন শেষ পর্যন্ত। মাঝে ৭৩ বলে ৬১ রান করে স্কট বোল্যান্ডের বলে ক্যারির তালুবন্দি হন ক্রলি। রুট জুটি বাঁধেন হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে। লায়নের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ইংলিশ ব্যাটার ব্রুক করেন ৩২ রান।
বেন স্টোকস মাঠে নামার সময় করতালিতে তাকে স্বাগত জানায় গ্যালারির দর্শকরা। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। এক রান করে জস হ্যাজেলউডের বলে উইকেটের পেছনে অ্যালেক্স ক্যারির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টোকস। পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া ইংলিশদের হাল ধরেন জো রুট।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩০ তম সেঞ্চুরি তুলে নেন রুট। অসিদের বিপক্ষে এটি তার চতুর্থ শতক। ১৫২ বলে সাত চার ও চার ছয়ে ১১৮ রানে অপরাজিত থাকেন রুট। রুটকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন জনি বেয়ারস্টো। রুট যেখানে খেলেছেন দেখেশুনে, বেয়ারস্টো সেখানে খেলেছেন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। ৭৮ বলে ৭৮ রান করে স্ট্যাম্পড হন লায়নের বলে। রুট-বেয়ারস্টো মিলে গড়েন ১২১ রানের জুটি। এরপর শেষ পর্যন্ত প্রথম দিনেই ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড।
অসিদের হয়ে চার উইকেট শিকার করেন নাথান লায়ন। হ্যাজেলউড পান দুই উইকেট।
পরে ব্যাট করতে নেমে কোনো বিপদ ঘটতে দেননি দুই অসি ওপেনার উসমান খাজা ও ডেভিড ওয়ার্নার। খাজা চার রানে এবং ওয়ার্নার অপরাজিত আছেন আট রানে।
ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল দিনের শেষভাগে অসিদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে বিপদে ফেলা। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ হলো না ইংলিশদের। উইকেট পড়ল অস্ট্রেলিয়ার। তাই বলা যায় প্রথম দিনে লড়াইটা হয়েছে সমানে সমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ৭৮ ওভারে ৩৯৩/৮ ডিক্লেয়ার (ক্রলি, ৬১, ডাকেট ১২, পোপ ৩১, রুট ১১৮*, ব্রুক ৩২, স্টোকস ১, বেয়ারস্টো ৭৮, মঈন ১৮, ব্রড ১৬, রবিনসন ১৭*; কামিন্স ১৪-০-৫৯-০, হ্যাজেলউড ১৫-১-৬১-২, বোল্যান্ড ১৪-০-৮৬-১, লায়ন ২৯-১-১৪৯-৪, গ্রিন ৬-০-৩২-১)।
অস্ট্রেলিয়া : ৪ ওভারে ১৪/০ (খাজা ৪*, ওয়ার্নার ৮*; ব্রড ২-০-৯-০, রবিনসন ২-০-৫-০)।