ইরানে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আরেক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
ইরানে চার দিনের ব্যবধানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জড়িত দ্বিতীয় জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দেশটির বিচার বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বার্তা সংস্থা মিজান জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তিকে সোমবার প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
মিজান বলেছে, “সকালে মাশাদ শহরে মাজিদ রেজা রেহনাভার্দকে জনসম্মুখে ফাঁসি দেওয়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর ‘আল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াই করার দায়ে’ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।”
এর আগে ইরান বৃহস্পতিবার মোহসেন শেকারি নামে আরেকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যক করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি দাঙ্গাকারী হিসেবে সেপ্টেম্বরে তেহরানের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করে বড় ছোরা দিয়ে আধাসামরিক বাহিনীর এক সদস্যকে আঘাত করেছিলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শেকারিকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে বলে দাবি অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠীগুলোর।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ইরানের কর্তৃপক্ষ অন্তত ২১ জনের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে। ‘গণআন্দোলনকে দমাতে এবং মানুষকে ভীত করতেই’ এসব মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে বলে ভাষ্য অ্যামনেস্টির।
ইরানের বিচারবিভাগের তথ্য অনুযায়ী দেশটির বিপ্লবী আদালতগুলো এখন পর্যন্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জড়িত আরও ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। অভিযুক্তদের পরিচয় জানায়নি তারা।
দেশটিতে নারীদের জন্য থাকা কঠোর পোশাকবিধি ঠিকঠাক না মানার অভিযোগে আটক ২২ বছর বয়সি মাশা আমিনি নীতি পুলিশের হেফাজতে মারা গেলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ইরানজুড়ে মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়।
নারীদের নেতৃত্বাধীন এসব বিক্ষোভ ইরানের ৩১টি প্রদেশের ১৬০টি শহরে ছড়িয়ে পড়ে, যা ১৯৭৯ সালে ইসলামী প্রজাতন্ত্রে পরিণত হওয়া দেশটির শাসকদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়।
ইরানের নেতারা সরকারবিরোধী এ বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ অ্যাখ্যা দিয়ে এর জন্য ‘বিদেশি শত্রুদের’ দায় দিয়েছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের ‘কঠোর হস্তে দমনে’ নির্দেশ দিয়েছেন।