পশ্চিমা কালো তালিকাভুক্ত চীনা রাজনীতিবিদ তিব্বতে কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান
চীনের জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পশ্চিমা দেশগুলোর কালো তালিকাভুক্ত একজন রাজনীতিবিদকে তিব্বতে দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দিল চীনের ক্ষমতাসীন দল চায়না কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)।এক প্রতিবেদনে গত মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ৫৮ বছর বয়সী ওয়াং জুন ঝেং চীনের স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে সিপিসি’র উপসচিব এবং প্রদেশটির উৎপাদন ও নির্মাণ করপোরেশনের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ছিলেন। তবে, তিব্বতে সিপিসির সবশেষ সেক্রেটারি উ ইংজি, যিনি ২০১৬ সাল থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন, তাঁর বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি পদত্যাগ করেছেন।
এ বছরের গোড়ার দিকে, উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ওয়াং এবং জিনজিয়াং পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরোর পরিচালক চেন মিংগুওকে কালো তালিকাভুক্ত করে।
সে সময় নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওয়াং চীনের গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘এ পদক্ষেপ মিথ্যা এবং ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে। এটি চরম অপবাদ এবং চীনা জনগণের খ্যাতি, মর্যাদার অবমাননা। একই সঙ্গে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্পষ্ট হস্তক্ষেপ এবং চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য এটা মারাত্মক হুমকি।’ তবে মার্কিন অর্থ বিভাগ সাফ জানিয়ে দিয়েছিল—বিশ্বের যে প্রান্তেই এ ধরনের অপরাধ হবে, সেখানেই তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে, পশ্চিমা কালো তালিকাভুক্ত একজন ব্যক্তি তিব্বতে চীনের ক্ষমতাসীন দলের প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ায় তাঁর কর্মকাণ্ডে চোখ রাখবে বিশ্ব সম্প্রদায়। এ ছাড়া পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর চলমান সীমান্ত উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে নজর রাখবে শক্তিশালী প্রতিবেশী ভারতও।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের বন্দিশিবিরে অন্তত ২০ লাখ উইঘুর মুসলিম এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বন্দি করেছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার। তবে, প্রদেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সবসময়ই অস্বীকার করে আসছে চীন। বেইজিংয়ের দাবি, সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলা করতে শিবিরগুলোতে পুনঃশিক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা।
এ ছাড়া চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান গত জুনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি পুনরায় বলতে চাই যে, জিনজিয়াংয়ে তথাকথিত গণহত্যার অভিযোগ একটি অপপ্রচার এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ, যা গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়।’