লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারেন গাদ্দাফির ছেলে সাইফ
লিবিয়ার প্রয়াত একনায়ক মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম গাদ্দাফি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
২০১৭ সালে বিদ্রোহীদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সাইফকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনায় আছেন তিনি।
জাতিসংঘ ও পশ্চিমা শক্তি চাইছে ডিসেম্বরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তবে প্রস্তুতি ও অন্যান্য প্রক্রিয়া মিলে অনেকেই ঘোষিত সময়ের মধ্যে ভোটাভুটি আয়োজন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন।
ভয়েস অব আমেরিকা ও লিবিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সাইফের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা পশ্চিমা কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতাদের উদ্বেগে ফেলেছে।
তাদের মতে, এমনিতেই লিবিয়ার সংঘাতময় শান্তি প্রক্রিয়াকে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হবে। এর মাঝে গাদ্দাফির ছেলেকে নতুন করে সমস্যা হিসেবে দেখছেন তারা।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সাইফের প্রার্থিতা সম্ভবত দেশের দক্ষিণের মরুভূমি এলাকা এবং গাদ্দাফির সাবেক অনুগতদের মধ্যে সাড়া ফেলবে। এ ছাড়া এক দশক ধরে চলে আসা সংঘাতে ক্লান্ত সাধারণ লিবিয়াবাসীও চাইবেন স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য যোগ্য কোনও প্রার্থী। সে দিকে সাইফকে তারা বেছে নিতে পারেন।
এরই মধ্যে সাইফের প্রার্থিতা সহিংসতার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এই বছরের গোড়ার দিকে লিবিয়ার গাদ্দাফিপন্থি মিডিয়া দাবি করে, সাইফকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে পূর্ব লিবিয়ার শাসক যুদ্ধবাজ জেনারেল খলিফা হাফতার ও তার ছেলে সাদ্দাম। হাফতারের প্রেসিডেন্ট হওয়ার উচ্চাভিলাষ রয়েছে। এ ছাড়া ২০১১ সালের অভ্যুত্থানের শীর্ষে থাকা কিছু ইসলামপন্থিও গাদ্দাফির পরিবারের সদস্যের ফিরে আসার গভীর বিরোধিতা করছে।
এর আগে এপ্রিলে রাজনীতিবিদ ও গাদ্দাফির চাচাতো ভাই আহমেদ গাদ্দাফি আল-দাম জানান, সাইফ এখনও নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। তবে তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে সাংবিধানিক কোনও বাধা নেই এবং তাঁর প্রতিই যাবে ভোটারদের রায়।
ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ক্লাউডিয়া গাজিনি বলেন, ‘সাইফ প্রার্থী হচ্ছেন কিনা এখনও অস্পষ্ট। তিনি ঘোষণা দিলেই আমি বিষয়টি বিশ্বাস করব।’
নির্বাচনের জন্য সাইফ এখনও তৈরি বলে মনে করেন না জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো হাফেড আল-ঘাওয়েল। তবে এটাও মনে করেন, সাইফ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে উল্লেখযোগ্য সমর্থন পাবেন।
২০১১ সাল থেকে বিদেশি শক্তির মদদে যুদ্ধ জড়িয়ে আছে লিবিয়ার একাধিক পক্ষ।