হিলটন হোটেলকে শিনজিয়াং প্রকল্প বাতিলের আহ্বান জানাল সিএআইআর
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক হসপিটালিটি কোম্পানি হিলটন ওয়ার্ল্ডওয়াইড হোল্ডিংসকে চীনের শিনজিয়াংয়ে হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
মুসলিম নাগরিক অধিকার ও পরামর্শক বিষয়ক অলাভজনক সংস্থা সিএআইআর জানিয়েছে, যেখানে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সেখানে একটি মসজিদ ছিল, যা চীনা কর্তৃপক্ষ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলেছে।
সিএআইআর’র ন্যাশনাল ডেপুটি ডিরেক্টর এডওয়ার্ড আহমেদ মিশেল আলজাজিরাকে বলেন, ‘যেখানে গণহত্যা চলছে, এমন একটি স্থানে একটি প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করবে, তা অবিশ্বাস্য।’
চীনকে মুসলিম উইঘুরদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে শিনজিয়াংয়ে উল্লেখ করা হয়, কীভাবে সংখ্যালঘু দলগুলো তাদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি পরিত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন।
সিএআইআর’র ডেপুটি ডিরেক্টর মিশেল বলেন, “আমরা বলি ‘আর কখনোই নয়’। কিন্তু আমরা আসলে তা বোঝাই না। হিলটন হয় হোটেল নির্মাণ করতে পারে এবং গণহত্যায় জড়িত হতে পারে, নতুবা তারা হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করে গণহত্যা বন্ধে সহায়তা করতে পারে।’
এডওয়ার্ড আহমেদ মিশেল আরও বলেন, ‘চীন এমন এক পরাশক্তি... কেউ তো আর মানবাধিকার নিয়ে লড়াই করবে না। এ বিষয়ে যদি কেউ কিছু করতে পারে, তারা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো। এই গণহত্যা বন্ধে করপোরেশনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একসময় মসজিদ ছিল এমন একটি স্থানে নতুন বাণিজ্যিক কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে চীন, যেখানে হিলটনের একটি হোটেলও থাকবে।
আলজাজিরার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বক্তব্যের অনুরোধ করা হলেও ভার্জিনিয়াভিত্তিক হিলটনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
সিএআইআর-এর সরকারি বিষয়ক পরিচালক রবার্ট এস ম্যাককাউ আলজাজিরাকে বলেন, ‘হিলটন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত হলেও দেখা যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি উইঘুর মুসলিম ও তুর্কি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চীনের গণহত্যা পরিচালনার স্বীকৃতিকে অস্বীকার করছে।’
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শিনজিয়াংয়ের শত শত মুসলিম নারী-পুরুষকে কারাগার অথবা অন্তবর্তীকালীন ক্যাম্পে আটক রাখা হয়েছে। যেখানে তাদের নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘উইঘুর, কাজাখ ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শিকার হচ্ছেন।’