হজের ভিডিও ‘লুকানোর’ নির্দেশ বাদশাহর!
সৌদি আরবে পদদলিত হয়ে হজ পালনকারীদের মৃত্যুর ঘটনার সব সিসিটিভি (ক্লোজড-সার্কিট টিভি) ভিডিও ফুটেজ রেকর্ডগুলো অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ। আজ সোমবার মধ্যপ্রাচ্যের বহুল প্রচারিত আরবি পত্রিকা আরব নিউজ ‘মিডলইস্ট প্যানোরমা নিউজের’ বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে। হজের আনুষ্ঠানিকতা চলাকালে গত বৃহস্পতিবার মক্কা নগরীর মিনায় ‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছুড়ে ফেরার পথে পদদলিত হয়ে ৭৬৯ জন নিহত ও ৯৩৪ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে সৌদি সরকার।
বিপুলসংখ্যক হাজি নিহত হওয়ার এই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি বাদশা এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে আরব নিউজ। পত্রিকাটি আরো জানায় এরই মধ্যে মিনা ট্র্যাজেডির বেশ কিছু ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে এক সৌদি যুবরাজের গাড়িবহরের সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার ফলে এই মর্মান্তিক ঘটনার সৃষ্টি হয়।
হাজিদের নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশসহ হজযাত্রীদের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। গতকাল ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, মিনায় হাজিদের মৃত্যুর দায় স্বীকার করে মুসলিম বিশ্ব ও নিহতদের পরিবারের কাছে সৌদি আরবের ক্ষমা চাওয়া উচিত।
তবে ঘটনার পরদিন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শেখ বলেছিলেন, ‘পবিত্র হজ পালনের সময় প্রাণহানির ঘটনা ছিল নিয়তি, আর নিয়তি সব সময়ই মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’
এর আগে গত শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি পদপিষ্ট ও ক্রেন ভেঙে হাজিদের নিহত হওয়ার ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছিলেন। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার মন্তব্যের পর হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটি রাজনৈতিক খেলায় নেমেছে বলে অভিযোগ করেছে সৌদি আরব। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের বলেছেন, ‘বেদনাদায়ক এই ঘটনা নিয়ে ইরানের রাজনীতি করা বন্ধ করা উচিত।’
সর্বশেষ খবর সৌদি কর্তৃপক্ষ মিনায় পদদলিত হয়ে নিহত ৬৫০ জনের ছবি প্রকাশ করেছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ক্যামেরুন, নাইজারসহ আরো অনেক দেশের গড়ে প্রায় ২০ জন হজযাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।