পাকিস্তান ছেড়ে গেলেন পারভেজ মোশাররফ
দেশ ছেড়েছেন পাকিস্তানের সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফ। উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ শুক্রবার ভোরে পাকিস্তান ছেড়ে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
এতদিন পারভেজ মোশাররফের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেশ ছাড়লেন তিনি।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে এসব কথা জানানো হয়েছে। দেশত্যাগের আগে সাবেক এই শাসক ডনকে বলেন, ‘আমি একজন যোদ্ধা এবং আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পরেই আমি দেশে ফিরে আসব।’
নিজের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলায় লড়বেন বলেও অঙ্গীকার করেন পারভেজ মোশাররফ। পাকিস্তানের উন্নয়নে কাজ করতে চান জানিয়ে মোশাররফ বলেন, সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আবারও রাজনীতিতে অংশ নেবেন তিনি।
দেশত্যাগের প্রসঙ্গে সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। বর্তমানে শারীরিক জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা নিতে তাঁকে দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলী খান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পারভেজ মোশাররফের বিদেশ সফরের ওপর সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর এখন তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে পারেন। মোশাররফ চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ফিরে আসবেন এবং তাঁরি বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলায় লড়বেন বলে তিনি অঙ্গীকার করেছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বারবারই জানিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই স্বৈরশাসক। তবু এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা নেন তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফ। ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুবাই ও লন্ডনে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবন কাটান মোশাররফ। ২০১৩ সালে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন করার ইচ্ছা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। তবে তাঁকে নির্বাচনে মনোনয়নের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা।