ইসরায়েলে জাতীয় সরকার গঠন, ইরানকে হুমকি বাইডেনের
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর এবার জাতীয় সরকার গঠন করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে, হামাসকে অর্থ ও সামরিক সহযোগিতা দেওয়ার অভিযোগ তুলে ইরানকে হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আজ বৃহস্পতিবারও (১২ অক্টোবর) ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। গাজার পাশাপাশি লেবাননেও বিমান হামলা করেছে ইসরায়েল। এর আগে লেবানন থেকে সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সেনাদের বিরুদ্ধে হামলা চালায়।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামাসের আক্রমণে এ পর্যন্ত এক হাজার ২০০ জন মারা গেছেন।
আর ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পর্যন্ত এক হাজার ১০০ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইরান যেন সতর্ক থাকে। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান ইসরায়েলের কাছে পৌঁছে গেছে। সেজন্য ইরানকে সতর্ক থাকার হুমকি দেন তিনি।
বুধবার (১০ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসে ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বাইডেন বলেন, ‘হামাস যে আক্রমণ করেছে, তা চরম নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু নয়। ইসরায়েলের প্রতি তার আবেদন, তারা যেন যুদ্ধেন নিয়ম মেনে চলে।’
ইরান হামাসকে অর্থ ও সামরিক সাহায্য দেয় বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশ সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় রেখেছে।
এদিকে, হামাসের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলে জাতীয় সরকার গঠিত হয়েছে। অর্থাৎ, ক্ষমতাসীন দলের পাশাপাশি বিরোধীরাও ইসরায়েলের সংকটকালীন সরকারে শামিল হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই জাতীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট জোটের নেতা গ্যান্টজকে পাশে নিয়ে টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই জাতীয় সরকারের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা জাতীয় জরুরি সরকার গঠন করেছি। ইসরায়েলের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। আমরাও সব বিভেদ ভুলে এক হয়েছি।’
নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাসের সব সদস্য মারা পড়বে। ইসরায়েলের সেনাদের মাথা কাটা হয়েছে, মেয়েদের ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে।’
এ সময় গ্যান্টজ বলেন, ‘আমরা পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে শত্রুদের বার্তা দিতে চাই।’
ইসরায়েলের শান্তিকর্মী বাসকিন বলেন, ‘ইসরায়েল ও হামাসের জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিল কাতার। তারা বলেছিল, হামাস তাদের হাতে বন্দি সব নারী ও শিশুকে মুক্তি দিক। বিনিময়ে ইসরায়েলও তাদের জেলে বন্দি ফিলিস্তিনি নারীদের মুক্তি দিক। কিন্তু, এ নিয়ে কোনো পক্ষই আলোচনা করতে রাজি হয়নি।’
বাসকিন আরও বলেন, ‘হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েল আক্রমণ বন্ধ না করলে তারা কোনো আলোচনায় বসবে না। আর ইসরায়েল তো হামাসের সঙ্গে কোনো আলোচনার মধ্যেই যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।’
বাসকিনের মতে, ‘অদূর ভবিষ্যতে কোনো পক্ষই আলোচনার টেবিলে বসবে না। আলোচনার জন্য কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস বা কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।’
এছাড়া তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান হামাসের হাতে জিম্মিদের ছাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছেন বলে তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও তুরস্ক তা করে না। গত বছর অবশ্য ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কও স্বাভাবিক করেছে দেশটি।