গাজায় রাতভর ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭০০
গাজা উপত্যকায় রাতভর ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে টানা তিন সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ করছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সংঘটিত হতাহতের ঘটনা একদিনের হিসাবে সর্বোচ্চ।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গতকাল ৪০০টিরও বেশি হামাস লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। এ ছাড়া তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও জানায়, ফিলিস্তিনি সংগঠনটিকে নির্মূল করতে তাদের লক্ষ্য অর্জনে আরও সময় লাগবে। খবর আলজাজিরার।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আকস্মিক হামলায় এক হাজার ৪০০ লোককে হত্যা করে।
এই হামলার জবাবে গাজায় অবিরাম বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় দুই হাজার ৩৬০ জন শিশুসহ কমপক্ষে পাঁচ হাজার ৭৯১ জন নিহত হয়েছে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টার হামলাতেই ৭০৪ জন লোক নিহত হয়েছে বলে জানায় মন্ত্রণালয়টি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরা জানান, গেল দুই সপ্তাহের বোমাবর্ষণের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।
গাজায় অবস্থানরত আলজাজিরার প্রতিবেদক ইয়োমনা এলসায়েদ বলেন, ‘হাজার হাজার পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে, চারদিকে কেবল ধ্বংস আর ধ্বংসের চিহ্ন। আকাশে শোনা যাচ্ছে ইসরায়েলের ড্রোন আর যুদ্ধবিমানের শব্দ। সবাই বলছে, সবাই অনুভব করছে, উপত্যকার কোনো অংশই এখন আর নিরাপদ নয়।’
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, বিমান হামলায় হামাসের তিনজন ডেপুটি কমান্ডার নিহত হয়েছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান, বিমান হামলা চালানো হয়েছে বেশ কিছু আবাসিক ভবনে। এসব ভবনের বেশকিছু রয়েছে গাজার দক্ষিণ অংশে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার সাধারণ মানুষকে আশ্রয় নিতে বলেছে।
গত রাতের একটি হামলায় গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে একটি চারতলা ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়। ওই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন এ তথ্য দিয়েছেন।
এ ছাড়া গাজা শহরের বাহলোল পরিবারের একটি বাড়িতে হামলায় ১৯ জন নিহত হয়। এ সময় ১২ জনেরও বেশি ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়েন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এদিকে বোমা হামলা চালানোর পাশাপাশি ইসরায়েল গাজার খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি তেলের সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধের অভাবে ৪০টিরও বেশি মেডিকেল সেন্টার তাদের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।