বিরামহীন বোমাবর্ষণে গাজার প্রধান দুই হাসপাতাল বন্ধ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত প্রধান দুই বৃহৎ হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত, নতুন কোনো রোগীকে ভর্তি বা চিকিৎসা দিতে পারছেন না তারা। এর মূলে রয়েছে ইসরায়েলি বাহিনীর ক্রমাগত বিমান হামলা ও হাসপাতাল দুটির আশেপাশে ব্যাপক গোলাগুলি। এ ছাড়া হাসপাতাল দুটিতে অক্সিজেন, জ্বালানি, জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, কাজ করছে না ইনকিউবেটর। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি জানায়, গাজার আল-শিফা ও আল-কুদস হাসপাতালের আশেপাশের এলাকায় স্থলপথে তীব্র যুদ্ধ চলছে। সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সদস্যরা হাসপাতালে রয়েছে এমন অভিযোগে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গতকাল রোববার (১২ নভেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে বলা হয়, ‘তিনদিন বিদ্যুৎ, পানি ও ইন্টারনেট পরিষেবার বাইরে থাকা আল-শিফা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। হাসপাতালটি আর হাসপাতাল হিসেবে কাজ করছে না।’ ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘ক্রমাগত গোলাগুলি ও বোমা হামলা ইতোমধ্যেই সংকটজনক পরিস্থিতিকে তীব্রতর করেছে। দুঃখজনকভাবে, রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘হাসপাতালগুলো যা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়া উচিত কিন্তু তা যখন মৃত্যু, ধ্বংস এবং হতাশার দৃশ্যে রূপান্তরিত হয় তখন বিশ্ব নীরব থাকতে পারে না।’
এদিকে, আল-শিফায় থাকা ১০০ মরদেহে সমাহিত করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা বলছে, গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাহি আল-কালিয়া সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএফএকে বলেন, ‘আল-শিফা হাসপাতালের কর্মীরা ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে নিহত কমপক্ষে ১০০ জনের দেহাবশেষ সমাধিস্থ করার জন্য লড়াই করছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কর্মীদের স্বাস্থ্যই ঝুঁকিতে রয়েছে। হাসপাতাল কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে চিকিৎসা বর্জ্য জমে গেছে।’
অন্যদিকে, আল-শিফা হাসপাতালের তিন নার্স নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বৈশ্বিক সংস্থাটি জানিয়েছে, বিদ্যুৎহীন হওয়ার পর থেকে আল-শিফা হাসাপাতালে ১২ রোগী মারা গেছে, যার মধ্যে দুই নবজাতক রয়েছে। আর গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে তিন নবজাতক মারা গেছে।