২০১৭
সেরা বিদেশি ১০ বই
বিদায়ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে ২০১৭ সালের। কালের গর্ভে বিলীন হতে যাওয়া বছরটির যথেষ্ট অবদান রয়েছে সাহিত্যে। জীবনের অন্যতম সেরা সাহিত্যকর্মটি তৈরি করতে ২০১৭ সালকেই বেছে নিয়েছেন অনেক লেখক-সাহিত্যিক। আর তাঁদের সাহিত্যকর্মগুলো থেকে ১০টি বইকে সেরার আসনে বসিয়েছেন নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকমণ্ডলী। চলুন, জেনে নিই তাদের নির্বাচিত ২০১৭ সালের সেরা ১০টি বই সম্পর্কে।
১. অটাম
বইটি লিখেছেন আলি স্মিথ। ১৯৬০-এর দশকের ব্রেক্সিটের সময়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে উপন্যাসটির পটভূমি। এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছে একজন প্রবীণ গীতিকার ও তাঁর প্রতিবেশী বালক, যাকে নিয়ে আবর্তিত হয়েছে এর কাহিনী। ২৭২ পৃষ্ঠার বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা ‘হ্যামিশ হ্যামিলটন’।
২. এক্সিট ওয়েস্ট
এই বইটিরও প্রকাশনা সংস্থার নাম ‘হ্যামিশ হ্যামিলটন’। বইটি লিখেছেন মহসিন হামিদ। গৃহযুদ্ধের কারণে এক দম্পতি গভীর চিন্তা মাথায় নিয়ে কীভাবে নিজ দেশ থেকে নির্বাসিত হয়, সে কাহিনীই তুলে ধরা হয়েছে উপন্যাসটিতে। অভিবাসী হিসেবে কীভাবে দুজন নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে শিখে যায়, তার বর্ণনাও উঠে এসেছে উপন্যাসে। সময়োপযোগী কাহিনী হওয়ায় বইটির স্বত্ব কিনে নিয়েছে রুশো ব্রাদার্স। উপন্যাসটিকে নিয়ে ছবি তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁদের। ছবিটি পরিচালনা করবেন মর্টেন টায়লডাম।
৩. পাচিনকো
উপন্যাসটি লিখেছেন কোরিয়ান-আমেরিকান ঔপন্যাসিক মিন জিন লি। এটি তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস। কোরিয়ান পরিবারের চার প্রজন্মের অভিজ্ঞতা ফুটে উঠেছে উপন্যাসে। এর সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি। নিজের পরিচয় স্বদেশ ও আত্মবিশ্বাসকে উপজীব্য করে তোলা হয়েছে এর কাহিনীতে। উপন্যাসের মূলভাব সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে শুরুতেই। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘ইতিহাস আমাদের ব্যর্থ করেছে, কিন্তু এটা কোনো ব্যাপার নয়।’
৪. দ্য পাওয়ার
বইটি লিখেছেন ব্রিটিশ লেখক নাওমি অ্যালডার। অ্যালডার আমাদের বর্তমান সময়, ইতিহাস, যুদ্ধ এবং রাজনীতি নিয়ে তাঁর চিন্তাশক্তির প্রতিফলন দেখিয়েছেন ‘দ্য পাওয়ার’ উপন্যাসে। তিনি দেখিয়েছেন নারীদের মধ্যে জটিল হয়ে ওঠা সমস্যাগুলো।
৫. সিং আনবারিড সিং
উপন্যাসটি লিখেছেন জেসমিন ওয়ার্ড। এর কাহিনী আবর্তিত হয়েছে ১৩ বছর বয়সী বালক জোজোকে কেন্দ্র করে। যে তার ছোট বোন ও নেশাগ্রস্ত কৃষ্ণাঙ্গ মাকে খুঁজতে যায় তার শ্বেতাঙ্গ বাবাকে নিয়ে। ৩০৪ পৃষ্ঠার এই উপন্যাস এরই মধ্যে ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ডের ফিকশন ক্যাটাগরিতে সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছে। উপন্যাসটির প্রকাশনার দায়িত্বে ছিল প্রকাশনা সংস্থা ‘স্ক্রিবনার’-এর ওপর।
৬. দি ইভলিউশন অব বিউটি : হাউ ডারউইন’স ফরগোটেন থিওরি অব মেট চয়েজ শেপস দ্য অ্যানিমেল ওয়ার্ল্ড অ্যান্ড আস
তালিকার একমাত্র বিজ্ঞানভিত্তিক বই এটি। এর লেখক পাখিবিজ্ঞানী রিচার্ড ও. প্রুম। বিবর্তনবাদের জনক ডারউইন বিশ্বাস করতেন, প্রকৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে গিয়ে আমরা শুধু বিবর্তিত হই না, অন্য একটা শক্তিও আমাদের গাঠনিক বিবর্তনে ভূমিকা রাখে এবং নারীদের ক্ষেত্রে এই বিবর্তন দেখা যায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। আর এ ধারণা থেকে জন্ম নেয় ‘থিওরি অব সেক্সুয়াল সিলেকশন’। তত্ত্বটিকে সবাই উপেক্ষা করে গেলেও প্রুমের গবেষণা কিন্তু এর পক্ষেই কথা বলছে। আর তাঁর যুক্তিতর্ক নিয়েই সাজানো হয়েছে বইটিকে।
৭. গ্র্যান্ট
এটি একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। লিখেছেন রন চেনরো। আর বইটি যাঁকে নিয়ে লেখা হয়েছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর জাঁদরেল জেনারেল ইউলিসিস এস. গ্র্যান্ট। আমেরিকার গৃহযুদ্ধে যার ছিল ব্যাপক ভূমিকা। গ্র্যান্টের জীবনী ও উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার সময়ের ঘটনাগুলো উঠে এসেছে চেনরোর লেখনীতে।
৮. লকিং আপ আওয়ার অউন : ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট ইন ব্ল্যাক আমেরিকা
বইটি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের পাবলিক ডিফেন্ডার জেমস ফরম্যান জুনিয়র। যেখানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের একদল কালো কর্মকর্তা কীভাবে রাজধানীতে বসে মাদক ও বিভিন্ন সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। ফলে সব কালোর প্রতি নেমে আসে আইনের অত্যাচার। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের আইনকে কটাক্ষ করে লেখা হয়েছে বইটি।
৯. প্রেইরি ফায়ার্স : দি আমেরিকান ড্রিমস অব লরা ইঙ্গালস ওয়াইল্ডার
এটি একটি লেখিকার আত্মজীবনী। মজার ব্যাপার হলো যিনি লিখেছেন, তিনিও একজন লেখিকা। বইটি লিখেছেন ক্যারোলিন ফ্রেজার। আর বইটি লেখা হয়েছে যাঁকে নিয়ে, তিনি হচ্ছেন ‘লিটল হাউস অন দ্য প্রেইরি’খ্যাত লেখিকা লরা ইঙ্গালস ওয়াইল্ডার। তাঁর জীবনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে।
১০. প্রিস্ট ড্যাডি
বইটি লিখেছেন প্যাট্রিকা লকউড। এটি মূলত স্মৃতিচারণমূলক বই। লকউড নিজের শৈশবের কথা লিখেছেন বইটিতে। তাঁর বাবা ছিলেন ধর্মযাজক। মূলত তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া মজার স্মৃতি নিয়েই লেখা হয়েছে ‘প্রিস্ট ড্যাডি’।