মেলা থেকে
প্রতিদিনই মেলা শুরু হোক সকাল থেকে : মোহিত কামাল
মেলায় এসেছেন নন্দিত লেখক মোহিত কামাল। বাংলা একাডেমির লিটলম্যাগ চত্বর ঘুরে দেখছেন তিনি। এ সময় কথা হলো তাঁর সাথে। বহুবছর থেকেই মেলায় আসেন তিনি। মেলা নিয়ে জিজ্ঞেস করাতে তিনি বলেন, ’অমর একুশে বইমেলা দিনদিন আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। বিশ্বের মধ্যে আর কোথাও এত দীর্ঘসময়ব্যাপী বইমেলা আয়োজনের নজির নেই।’
মেলায় ঘুরে কেমন দেখলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ’গত বারের চেয়ে মেলা আরো প্রসারিত হয়েছে, যেটা আমাকে খুব আনন্দিত করেছে।’ মেলার স্টল বিন্যাস নিয়ে তিনি বলেন, ’বাংলা একাডেমির মধ্যে স্টল বিন্যাস ভালো হয়েছে। লিটলম্যাগ চত্বর সজ্জাকরণ গতবারের চেয়ে আরো নান্দনিক হয়েছে। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্টল বিন্যাস দেখে মনে হয়েছে কোনো কোনো স্টল বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে, কোনোটা আবার বেশ দৃশ্যমান। ফলে অনেক প্রকাশক মন খারাপ করে আছে এই ভেবে যে, তাদের স্টলে পাঠক আসবে কি না ।’
স্টল বিন্যাসবিষয়ক সমস্যা নিরসনে কী করা যেতে পারে, এমন প্রশ্ন করলে মোহিত কামাল বলেন, ‘এজন্য মেলার ডিজাইন এমনভাবে করা দরকার যাতে সব পাঠক সব স্টলে ঢুকতে পারে, বই হাতে নিয়ে ভালো করে দেখে-পড়ে কিনতে পারে। আশা করছি পরের বার এই সমস্যা সমাধানে বাংলা একাডেমি কার্যকর পদক্ষেপ নিবে।’
কথোপকথনের একপর্যায়ে মোহিত কামাল আক্ষেপ করে বলেন, ‘জেনেছি এত বড় বইমেলায় সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই।’ ঐতিহ্যে পরিণত হওয়া এই মেলায় সরকারের বড় রকম পৃষ্ঠপোষকতা থাকা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
মেলার সময় নিয়ে মোহিত কামাল বলেন, ‘শুধু বন্ধের দিনে নয়, প্রতিদিনই মেলা শুরু হোক সকাল থেকে।’ যাতে দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে লোকজন মেলায় এসে আবার বিকেলে বাড়ি ফিরে যেতে পারে। প্রথম দিকে উপস্থিতি কম হলেও পরবর্তী সময়ে উপস্থিতি বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
তবে বই প্রকাশনা কেবল অমর একুশে মেলা কেন্দ্রিক হওয়াতে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এটা আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা।’ আর বই প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রকাশকদের নিজস্ব সম্পাদনা পর্ষদ থাকার ব্যাপারে জোর দেন। এতে মানহীন বইয়ের সংখ্যা কমবে বলে মনে করেন তিনি। আর শিশুদের বই প্রকাশে আরো বেশি যত্নবান হওয়ার জন্যে প্রকাশকদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে কোনো রকম ভুল তথ্য না থাকে, ছাপাও যেন হয় শতভাগ নির্ভুল।
মেলায় এ বছর মোহিত কামালের মৌলিক বই আসছে দুটি। ইতিমধ্যে প্রথমা থেকে এসেছে সামাজিক সংকট নিয়ে লেখা গ্রন্থ ‘চোরাগলি’, আর বিদ্যা প্রকাশ থেকে কাল আসবে উপন্যাস ‘দুমুখো আলো’। এ ছাড়া তাঁর সম্পাদনায় একটি সংকলিত গল্পগ্রন্থও বেরুবে।