মেলা
বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা
প্রায় ৪০০ বছর আগে বগুড়ার পোড়াদহে সন্ন্যাসীদের আর্বিভাব ঘটে। সন্ন্যাসীরা সেখানে নিজেদের বসবাসের স্থান করে নেয়। জায়গাটি ধীরে ধীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে ধর্মীয় স্থান হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠে। সেখানে তারা মাঘ মাসের শেষ বুধবারে সন্ন্যাসী পূজার আয়োজন করে। পরে পূজায় বিভিন্ন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সমাগম হতে থাকে এবং পূজার দিনটিকে কেন্দ্র করে সেখানে বসতে থাকে বিভিন্ন দোকানপাট। সেই থেকে শুরু পোড়াদহ মেলা।
যদিও এ মেলার পূর্ব নাম ছিল সন্ন্যাসী মেলা। পরে স্থানের নামের প্রাধান্যের কারণে পোড়াদহ মেলা নামে পরিচিত লাভ করে। প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবারে বগুড়ায় গাবতলীর ঐতিহ্যবাহী এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাটি শুধু বগুড়াতে নয়, দূর দূরান্তের বহু মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। মেলা শুরুর আগে থেকেই এখানকার স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের দাওয়াত করে আনেন। পোড়াদহ মেলা তাদের কাছে সব থেকে বড় একটি উৎসবের দিন। আর সেজন্যই মেলাটি একদিনের জন্য অনুষ্ঠিত হলেও তার উৎসব চলতে থাকে সপ্তাহজুড়ে।
এ মেলার প্রধান আর্কষণ হলো বাহারি প্রজাতির মাছের সমাগম। মেলায় প্রায় দুই থেকে আড়াই মণ ওজনের মাছ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও পাঙ্গাস পাওয়া যায়। মাছের পাশাপাশি আরেকটি জিনিস আপনাকে বিশেষভাবে অবাক করবে। আর তা হলো মেলায় তৈরি বড় আকারের মিষ্টি। একেকটি মিষ্টির ওজন দেড় থেকে দুই কেজি হয়ে থাকে। আরো রয়েছে রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি।
মেলায় বিনোদনের জন্য রয়েছে- নাগোরদোলা, মিনি ট্রেন, ঘোড়ার গাড়ি, সার্কাস ইত্যাদি। এ ছাড়া দিনটি যাত্রাপালা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেলায় বিভন্ন জেলা থেকে আগত লোকজন কসমেটিক, খেলনা, গিফট সামগ্রির দোকান বসিয়ে থাকে।