প্রকাশ হলো ‘আহমদ রফিক : জীবন বাস্তবতার নান্দনিক কবি’
ভাষাসৈনিক, কবি ও রবীন্দ্রগবেষক আহমদ রফিক ছয় দশক ধরে কাব্যচর্চা করছেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যের শিল্পময় জীবনবাস্তবতা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে রচিত হয়েছে ‘আহমদ রফিক : জীবনবাস্তবতার নান্দনিক কবি’ গ্রন্থটি। ১৩টি প্রবন্ধ সংকলনের এই গ্রন্থ রচনা করেছেন সত্তরের দশকের কবি মুনীর সিরাজ।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে প্রকাশনা সংস্থা ‘অন্যপ্রকাশ’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব। যৌথভাবে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, বইটির লেখক মুনীর সিরাজ এবং ‘অন্য প্রকাশে’র প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভাষাসৈনিক ও সাহিত্যিক আহমদ রফিক।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আহমদ রফিকের রচনা বৈচিত্র্যময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। জীবনে নানা কিছু দেখেছেন, আন্দোলন-সংগ্রামের লড়েছেন তিনি। সাম্যবাদী চেতনা তাঁর লেখালেখিতে দিয়েছে অফুরান শক্তি।’ আহমদ রফিকের কবিতা সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, ‘তাঁর কবিতা বাহুল্যবর্জিত। অলঙ্কারের বাহুল্য নেই। আড়ম্বর নেই। তবে আছে বোধ ও চেতনার শানিত উপলব্ধি। সমাজ ও রাজনীতি নিয়ে তার অঙ্গীকার ও স্বপ্ন ঘুরে ফিরে এসেছে কবিতায়। কবির এ স্বপ্নই আমাদের সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম হাতিয়ার।’
বইটির লেখক কবি মুনীর সিরাজ বলেন, ‘কিংবদন্তি লেখক ও ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের ১২টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৩ সালে তাঁর কবিতাসমগ্র প্রকাশিত হয়েছে। এই কবিতাসমগ্রের ওপর ভিত্তি করে আমি বইটি লিখেছি। তাঁর ৮৭তম জন্মদিন উপলক্ষে এ গ্রন্থ প্রকাশিত হলো।’
দীর্ঘ সাহিত্যজীবনের অনুভূতি ব্যক্ত করে আহমদ রফিক বলেন, ‘কবিতা দিয়েই মূলত শুরু আমার সৃজনশীল লেখালেখি। পরে সময়ের প্রয়োজনে লিখেছি নানা কিছু। তবে কবিতার প্রতি আমার রয়েছে আলাদা দরদ ও প্রীতি।’
আহমদ রফিক পড়াশোনা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সংশ্লিষ্ট ছিলেন সাহিত্য চর্চার সাথে। যুক্ত ছিলেন ছাত্র রাজনীতির সাথে। বিভিন্ন প্রগতিবাদী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি অংশ নিয়েছিলেন ’৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলনে। ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন একজন লড়াকু সৈনিকের ভূমিকায়। পরে রবীন্দ্রবিষয়ক গবেষণার ফসল হিসেবে তিনি বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডারে একাধারে যোগ করেছেন অসংখ্য অনবদ্য সব গ্রন্থ। কিন্তু তাঁর সৃজনশীল লেখালেখির শুরুটা যে কবিতা দিয়ে তা অনেকটা আড়ালে চলে যায়। ‘একুশে পদক’ প্রাপ্ত এ লেখকের কবিসত্তাকে নতুন করে সামনে নিয়ে আসতে প্রকাশিত হয়েছে ‘আহমদ রফিক : জীবনবাস্তবতার নান্দনিক কবি’ শিরোনামের গ্রন্থটি।