সুব্রানার ক্যানভাসে জীবনের অব্যক্ত গল্প
কোনো ছবিতে কোলাহলমুখর বাজার, কোনোটায় আবার আনন্দ অনুষ্ঠান, কোনোটা শ্যামল নিসর্গ, ফুল-পাখি, প্রকৃতির সঙ্গে নীল আকাশের মুখরিত ব্যঞ্জনার সমারোহ। কিছু ছবি আছে, যাতে রয়েছে নির্মহ আশা-আকাঙ্ক্ষার, নিজস্ব দুঃখ, আবার দুঃখকে অতিক্রম করে সময়কে আলিঙ্গন করার প্রতিচ্ছবি। এসবই যেন ছেলে হারানো মা শিল্পী শামীম সুব্রানার জীবনের অব্যক্ত গল্প।
গতকাল শনিবার ছিল শিল্পী শামীম সুব্রানার অকালপ্রয়াত সন্তান শাবাব মুরশিদের জন্মদিন। ছেলেকে উৎসর্গ করে আট বছর ধরে আঁকা ৪০টি চিত্রকর্ম নিয়ে ‘হোয়াট আই টক অ্যাবাউট, হোয়েন আই টক অ্যাবাউট লাইফ’ শিরোনামে শুরু হয়েছে শিল্পী শামীম সুব্রানার প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী।
‘আর্টকন’-এর সহযোগিতায় ‘গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে’ গত ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় যৌথভাবে প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন শিল্পী হাশেম খান, রফিকুন নবী, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান।
প্রদর্শনী নিয়ে শিল্পী শামীম সুব্রানা বলেন, ‘আমি মনে করি, কোনো কাজই আমার শেষ হয় না। সব সময়ই কিছু না কিছু করার বাকি থাকে। এ ভাবনা থেকে কোনো কাজই শেষ হয় না। তবে আমার দুই মেয়ের চাপের মুখে প্রদর্শনীর কাজ শেষ করলাম।’
শিল্পী হাশেম খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর শামীম সুব্রানা প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন, সে জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করব, শিল্পের ভুবনে তাঁর পথচলা অব্যাহত থাকবে।’
শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, ‘অনেক দিন পর শিল্পকলার ময়দানে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে শিল্পী শামীম সুব্রানাকে। এ অনুষ্ঠান দুঃখ-আনন্দ মিলিয়ে। শিল্পী সন্তান হারিয়েছেন। কিন্তু আমি মনে করি, প্রত্যেক সৃষ্টি একেকটি সন্তান। আজকের আবার যে পথচলা শুরু হলো, সেটা যেন এখানেই থেমে না যায়, সেটাই আমি কামনা করি।’
সুলতানা কামাল বলেন, ‘এত সুন্দর করে শিল্পী ছবিতে জীবনের কথা বলেছেন, একেবারে হৃদয় ছুঁয়ে গেল। সে সঙ্গে সমাজের যাপিত জীবনের সবকিছুই উঠে এসেছে তাঁর ছবিতে।’
আয়োজকরা জানান, প্রদর্শনীতে শিল্পকর্ম বিক্রয়লব্ধ তহবিল শিশু ও যুব উন্নয়নে নিবেদিত অলাভজনক সংস্থা ‘শাবাব মুরশিদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে শিশুদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হবে।
প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এটি খোলা থাকবে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।