শেষ হলো ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’
শেষ হলো রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত ১৪তম ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৬’। ‘বেটার ফিল্ম, বেটার অডিয়েন্স, বেটার সোসাইটি’ স্লোগান নিয়ে অনুষ্ঠিত এ উৎসবের গতকাল ছিল শেষ দিন।
৯ দিনব্যাপী এই আয়োজনে ৬০টি দেশের ১৭০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয় এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে। গতকাল এ উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে ছিল বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান। এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী অনুষ্ঠান।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষ জীবনে চলচ্চিত্রের ছোঁয়া পেয়েছিলেন। তাঁর মতে, চলচ্চিত্র হলো দৃশ্যের গতিময়তা। এ শিল্পে সমন্বিত হয় অন্য সব শিল্প। স্বপ্ন ও জীবনের সমন্বয় সাধনের এক অনন্য প্রয়াস চলচ্চিত্র।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘৯ দিনের এই উৎসব দেখতে না দেখতেই শেষ হয়ে গেল। এ উৎসবের জন্য ৯ দিন সময় আমার কাছে কম মনে হয়েছে। আশা করি, আগামী বছরও এই উৎসব আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে।’
এ অনুষ্ঠানে সেরা চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে বাদল রহমান অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ফিলিপাইনের ‘চাইল্ড হর্স’ চলচ্চিত্র। বেস্ট অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড জিতেছে বাংলাদেশের সিনেমা রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। স্পিরিচুয়াল ফিল্ম ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছে ইরানি চলচ্চিত্র ‘টুডে’ এবং এই ক্যাটাগরিতে তালিকায় আরো রয়েছে চায়না চলচ্চিত্র ‘লাইফ লাইন’।
সেরা তথ্যচিত্র নির্বাচিত হয়েছে জেরুজালেমের ‘নো বডি হোম’, এ তালিকায় আরো রয়েছে আর্জেন্টিনার ‘মাদ্রে দি লস ডিওস’।
স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র শাখায় জয়ী হয়েছে চায়না চলচ্চিত্র ‘প্যান রু ইউন নি’ এবং অস্ট্রিয়ার ‘কেচ আপ কিড’, এই তালিকায় বিশেষ অবস্থানে রয়েছে ইরানি চলচ্চিত্র ‘ইট হিটস আপন দ্য রুফ’।
নারী নির্মাতা বিভাগে জয়ী হয়েছে সেরা ফিচার ফিল্ম ইরানের ‘শিয়ারে ১৪৩’ এবং বিশেষ হয়েছে রুবাইয়াত হোসেনের ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। নারী বিভাগে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বেলজিয়ামের ‘স্প্রিংতিজ’, এই তালিকায় বিশেষভাবে আরো রয়েছে কিরগিজস্তানের ‘টোপারাক’। নারী বিভাগে সেরা তথ্যচিত্র পাকিস্তান, ব্রাজিল ও আমেরিকার যৌথ নির্মাণ ‘কেটু অ্যান্ড দি ইনভিজিবল ফুটম্যান’।
অস্ট্রেলিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ইরান ও আফগানিস্থানের যৌথ নির্মাণ ‘এ ফিউ কিউবিক মিটারস অব লাভ’, এই শাখায় বিশেষ বিবেচনায় ছিল মোরশেদুল ইসলামের চলচ্চিত্র ‘অনিল বাগচীর একদিন’। ‘দ্য লাস্ট এক্সিকিউশনার’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা নির্মাতা নির্বাচিত হয়েছেন থাইল্যান্ডের নির্মাতা টম ওয়ালার, এ ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচিত হয়েছে আবু শাহেদ ইমনের ‘জালালের গল্প’।
সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন যৌথভাবে থাইল্যান্ডের ভিথায়া প্যানসিঙ্গারাম ‘দ্য লাস্ট এক্সিকিউশনার’ চলচ্চিত্রের জন্য এবং ইরাকের মোহাম্মদ আবু আল আব্বাস ‘স্যামট আল রাই’ চলচ্চিত্রের জন্য। সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন ইরানের ফাতেমা মোটামেদ আরিয়া ‘নাবাত’ চলচ্চিত্রের জন্য।
‘সে মাহি’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পাণ্ডুলিপিতে পুরস্কৃত হয়েছেন ইরানি নিলুফার মাহলোজি। সেরা সিনেমাটোগ্রাফার হয়েছেন ‘সারা’ চলচ্চিত্রের জন্য প্যালেস্টাইনের ইব্রাহিম ইয়াগি।