শুরু হলো ৪০তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা
শুরু হয়েছে ৪০তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। আজ সোমবার বিকেলে কলকাতার ইস্টার্ন বাইপাসের কাছে মিলনমেলা ময়দানে শুরু হয়েছে বইপ্রেমীদের প্রাণের এই উৎসব। আজ বিকেলে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরাবরের মতো এ বছর কলকাতা বইমেলায় উদযাপিত হবে বাংলাদেশ দিবস।
এবারে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার মূল থিম ‘বলিভিয়া’। ফলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়াকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়। বইমেলার থিম সংয়েও জায়গা করে নেয় বলিভিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলিভিয়ার বিশিষ্ট সাহিত্যিক ম্যাগেলা বাওদোইন উপস্থিত ছিলেন।
ঘণ্টাধ্বনির মাধ্যমে মেলা উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কলকাতা বইমেলা সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি অনুষ্ঠান হিসেবে জায়গা করে নিতে পেরেছে। আজ যতই ইন্টারনেট থাকুক না কেন, বইয়ের বিকল্প কিছু নেই। তাই এই মেলা বরাবরই একটু অন্যরকম।’
মমতা বলেন, ‘বইয়ের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। আজও যখন ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে বই দেখি, তখন ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়ে যায়। বহু লেখক-লেখিকা সারা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন এই কলকাতা বইমেলায় যাতে তাঁদের বই প্রকাশ করা যায় সেই জন্য।’
মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার এ বছরের থিম বলিভিয়াকে করার জন্য মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা গিল্ডকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভারতের জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি বলিভিয়ার জাতীয় সংগীতও বাজানো হয়।
বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘জার্মানির ফ্রাংকফুর্টের বইমেলার থেকেও এখানে উচ্ছ্বাস, জনসমাবেশ বেশি।’ আজ এই বইমেলা সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক চেহারা নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিন্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, সভাপতি সুধাংশু শেখর দে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিত পুরকায়স্থসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
আজ সোমবার বইমেলার উদ্বোধন হলেও বুধবার থেকে এই মেলা খুলে দেওয়া হবে সর্বসাধারণের জন্য। আর মেলা চলবে ২৭ জানুয়ারি থেকে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ।
আর ২ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা প্রাঙ্গণে পালন করা হবে বাংলাদেশ দিবস। প্রতিবছরের মতো এ বছরও মেলা প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকাশনী সংস্থা তাঁদের বইয়ের সম্ভার নিয়ে এসেছে।
কলকাতা বইমেলায় এ বছর মোট ৮০০টি স্টল রয়েছে, যার মধ্যে ২০০টি স্টল লিটল ম্যাগাজিনের। এ ছাড়া প্রতিদিন নানা অনুষ্ঠান ও আলোচনা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণে।
এই মেলা ঘিরে এরই মধ্যে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বইপ্রেমীদের ভিড়ে জমজমাট হতে আরম্ভ করেছে শহর কলকাতা। বাংলাদেশ থেকেও বইপ্রেমী বহু মানুষ এখন কলকাতায় এসেছেন। আর কলকাতা বইমেলাকে ঘিরে শহরের বুকে বাড়তি চাপ সামাল দিতে বইমেলা প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত যানবাহনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।