গপ্পো তক্ক যুক্তি
আমার প্রত্যেকটা চলচ্চিত্র আমার দিনলিপি : কিম কি দুক
বর্তমান সময়ে অল্প যে কয়েকজন চলচ্চিত্রনির্মাতার নাম সবার আগে আসবে তাঁদের মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ কোরিয়ার কিম কি দুক। তিনি যেন চিত্র দিয়েই সবকিছু বলতে ভালোবাসেন। তাই তাঁর চলচ্চিত্রে কথার খুব কম উপস্থিতি থাকলেও কারো বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় না। হতে পারে সে দর্শক ভিনদেশি কিংবা কোরিয়ান।
কিম কি দুক ১৯৯৬ সালে ‘ক্রোকোডাইল’ দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তারপর তিনি একে একে নির্মাণ করেছেন ‘ব্রিডকেজ ইন’ (১৯৯৮), ‘দ্য ইজল’ (২০০০), ‘ব্যাডগাই’ (২০০১)-এর মতো বেশকিছু বিখ্যাত চলচ্চিত্র।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন কান, ভেনিস ও বার্লিনের মতো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার। ২০০৭ সালে এই গুণী নির্মাতার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তুরস্কের ই. ওজদেমির। সেই সাক্ষাৎকার ভাষান্তর করা হলো।
ই. ওজদেমির : বিভিন্ন চরিত্র বা অবজেক্টের (সুর, সঙ্গীত, শব্দ, দৃশ্য, স্থান প্রভৃতি) ব্যবহার করে আপনি চলচ্চিত্রে পরাবাস্তববাদের নানা উপাদান যোগ করেছেন। যা কঠোর বাস্তবতাকে তুলে ধরে (তবে এটা এমন এক ধরনের বাস্তবতা যা অনেকেই এর কঠোরতার জন্য অস্বীকার করেন)। চলচ্চিত্রে পরাবাস্তববাদের এই সংমিশ্রণ সত্যিই এক দারুণ ব্যাপার। এই সংমিশ্রণ দর্শকদের এমনভাবে আন্দোলিত করে যে, তারা একে আলাদা করতে পারে না। এক পর্যায়ে দর্শকের কাছে বাস্তব আর পরাবাস্তবের সীমা অস্পষ্ট হতে থাকে। আপনি কি চান মানুষ পৃথিবীকে এই দুটি দৃষ্টিভঙ্গির সম্মিলিত রূপে দেখুক? এর পেছনে কি এমন বিষয় কাজ করে যে, কোনো কিছুকে আমাদের দার্শনিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত?
কিম কি দুক : এই আধুনিক সমাজ অনেকটা চলমান ট্রেনের মতো। যেখানে সবাই অন্ধের মতো কাঙ্ক্ষিত যশ-প্রতিপত্তি আর সুখের পেছনে ছুটছে। আপনি ভালোভাবে খেয়াল করলে হয়তো দেখতে পাবেন, মানুষ সাধারণত এর বাইরে ভাবে না। আবার সেখানে এমন কিছু মানুষ আছে যারা এই দুর্বলতাকে স্বীকার করতে চায় না এবং মনে করে, সবকিছুই তারা টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারে। আর তারা উগ্র দেশাত্মবোধের কারণে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং কেউ এ ক্ষেত্রে সামান্য ব্যত্যয় ঘটালে তাকে ঘৃণা করে। এই প্রত্যেকটি বিষয়ই আমাকে অস্থির করে তোলে, মনে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। আর এটা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে ব্যক্তিগত মতামত উপেক্ষিত, অনেক ক্ষেত্রে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের শিকার হচ্ছে। বস্তুতপক্ষে, খুবই দুঃখজনক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে টিকে আছে শুধুই নির্মমতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নির্যাসটুকুও এখন বিলুপ্তির পথে। তারপরও এখানে একটা প্রত্যাশার জায়গা আছে, তা হলো এই দুটি শ্রেণির সহাবস্থান। আবার এমনও হতে পারে, পৃথিবীর স্বার্থে এই সহাবস্থান নির্ধারণ করাটা হয়তো আমারই এক ধরনের বিভ্রম।
ই. ওজদেমির : আপনার নির্মিত চরিত্রগুলো খুবই শান্ত কিন্তু আইন, নিয়মকানুনের কোনো তোয়াক্কা করে না। যাদের এই সমাজ বিচ্ছিন্ন বা পর করে দিয়েছে। আবার এই সমাজই তাদের পর করে দিয়ে ‘অপর’ হিসেবে নির্মাণ করে। কিন্তু আমরা এমন এক ধরনের অভিব্যক্তি পাই যে, এই চরিত্রগুলোর মুক্তি ও আত্মবিশ্বাসের অভ্যন্তরীণ বা নিজস্ব একটা বোধ আছে। যারা বড় বড় অনেক কথা বলে কিন্তু জীবনের কোনো পর্যায়েই তারা কখনো মানসিক পীড়ায় ভোগে না; এ রকম মানুষদের কাছে কি আপনি মুক্তিপ্রিয় মানুষদের শ্রেষ্ঠ হিসেবে তুলে ধরতে চান? আপনার ভাষায় কারা আসলে ‘গৃহপালিত’? নাকি আপনার বিশ্বাস, গুরুত্বের সঙ্গে এই মুক্তিপ্রিয় মানুষগুলোর আলোচনায় আসা দরকার?
কিম কি দুক : চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমি কখনো শ্রেষ্ঠ বা নিকৃষ্ট চরিত্রের গল্প বলার চেষ্টা করিনি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা প্রত্যেকেই আমাদের নিজস্ব বোধ বা চিন্তা-চেতনার জগতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘অপর’দের প্রতি এটা চরম নিষ্ঠুরতা যে, এই পৃথিবীতে তারা নিজেদের মর্মান্তিক প্রাণী হিসেবে নির্মাণ করতে বাধ্য হয়। কারণ তাদের উপেক্ষা বা হেয় করে বিভিন্ন ধরনের আচরণ, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা হয়; যা এই ধরনের নিষ্ঠুরতার মধ্যে পড়ে। যারা অপর তত্ত্বের শিকার তারা অন্যের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, আবার কখনো নিজেকেই যন্ত্রণা দেয়। অন্যদিকে যারা বেড়ে উঠে, তাদের পৃথিবী সম্পর্কে একটা বৃহৎ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। কিন্তু আজকের দিনে সাধারণ মানুষ ‘অপর’ কিংবা নিজেদের, কারো দ্বারাই ক্ষতিগ্রস্ত বা আঘাত পেতে চায় না। অথচ তারা এখনো আর কাউকে না হোক ‘অপর’দের ঠিকই আঘাত করে। আর এজন্যই আমি চলচ্চিত্রে এ ধরনের চরিত্র নিয়ে আসি, যারা উভয়ই ‘অপর’ কিংবা নিজেদের নিষ্ঠুরতার শিকার।
ই. ওজদেমির : ক্যামেরা ব্যবহারের কথা বাদ দিলে আপনার চলচ্চিত্রের গঠনকে কীভাবে বর্ণনা করবেন? কিংবা আপনার প্রথম চিন্তা কী থাকে? আর দৃশ্য ধারণের জন্য স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোর প্রতি বেশি মনোযোগ দেন? যেমন অবজেক্ট, অভিনেতা/ অভিনেত্রী প্রভৃতি; এক্ষেত্রেও ক্যামেরার অবস্থানের বিষয়টি বিবেচনায় আনার দরকার নেই। গঠনবাদে ক্যামেরার এই ধরনের ব্যবহারকে রিপ্রেজেন্ট করত, বস্তুতপক্ষে যা শুরুর দিকের সিনেমায় হতো। যাই হোক, তা আজকের দিনেও হতে পারে। প্রাক আধিপত্যবাদী (প্রিডমিনেন্ট) দৃষ্টিভঙ্গির সময় ক্যামেরা ব্যবহার করে এই ধরন নির্মাণ করা হয়েছিল। আপনি কিন্তু এটাকে একটা ‘নতুন’ ধরনের বাহক হিসেবে ভেবে দেখতে পারেন। এ রকম ভিন্ন কিছু সৃষ্টি করার কথা ভেবেচিন্তে দেখেছেন কখনো? অন্যভাবে বললে, এ নিয়ে আপনার কোনো পরিকল্পনা ছিল?
কিম কি দুক : এক সময় আমি চলচ্চিত্রের ফ্রেমের ভিতরে কোনো বিষয় দর্শকদের দেখানোর চেষ্টা করতাম। কিন্তু দিনের পর দিন প্রচুর কাজ করার পর, এক পর্যায়ে আমি চলচ্চিত্রের পর্দায় যে আবহ তৈরি হয় তার মধ্য দিয়ে পর্দার বাইরের বিষয়গুলোকে কল্পনা করতে চাই। শুরুতে আমি কোনো একটা বিষয়কে ধরে সিনেমা বানাতাম। যা দেখলে সবসময় বিশ্বাসযোগ্য মনে হতো না। কিন্তু এখন কিংবা ভবিষ্যতে আমি এমন ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চাই, যা দেখতে বেশ অদ্ভুত মনে হলেও বিশ্বাসযোগ্য হবে। আমি মনে করি না যে, বর্ণনা কৌশল বা রংয়ের প্রকাশ বা ক্যামেরার দৃশ্যায়ন খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমার কল্পনাকে কতদূর নিয়ে যেতে পেরেছি।
ই. ওজদেমির : কোরিয়ার মূলধারা চলচ্চিত্রে যেসব নির্মাতারা রয়েছেন যেমন : কিম জি-উন ও পার্ক চ্যান-উক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকেও যাঁরা এগিয়ে রয়েছেন যেমন : হং স্যাং-সু ও লি চ্যাং ডাং- এসব নির্মাতার চেয়ে আপনাকে একটু আলাদাভাবে দেখা হয়। যেসব নির্মাতার নাম বলা হলো তাঁদের এবং কোরিয়ান চলচ্চিত্রকে আপনি কীভাবে দেখেন? এ ছাড়া কি কোনো চলচ্চিত্র নির্মাতা রয়েছেন যাকে আপনি গভীরভাবে অনুভব করেন?
কিম কি দুক : আমি তাদের সবাইকে পছন্দ করি। কিন্তু আমি মনে করি, তারা সবাই আমার থেকে ভিন্ন। লি চ্যাং ডাং ও হং স্যাং-সু থেকে শুরু করে আমি ইউরোপের সেসব লেখকের স্পর্শ অনুভব করি যাঁরা ভালো ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। চ্যাংউক পার্ক ও কিম জি-উন থেকে শুরু করে হলিউডের জীবন্ত কিংবদন্তি নির্মাতাদের আমি অনুভব করি, যারা চটকদার, ভয়ানক এমনকি ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। যদিও আমি সে ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারব কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই। এই ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণের সামর্থ্য কিংবা সময় কোনোটাই আমার নেই। তা ছাড়া এ ধরনের কাজ করার জন্য যে প্রযুক্তিগত জ্ঞান বা ধৈর্য প্রয়োজন তাও আমার নেই। আমি শুধু দৃশ্যের ওপর গুরুত্ব দেই আর গল্প বলার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করি। আমি সর্বদাই অপেশাদার বা শখের নির্মাতা হিসেবেই থাকতে চাই। কিন্তু আমি চাই, আমার চলচ্চিত্র যেন কারো চলচ্চিত্রের নকল না হয়।
ই. ওজদেমির : যদি ভুল না করে থাকি, দ্য ইজল-এর (২০০০) মধ্য দিয়ে আপনি চলচ্চিত্রের বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করেন। একজন কোরিয়ান চলচ্চিত্রনির্মাতা হিসেবে আপনার কী মনে হয়? ইউরোপ কিংবা আমেরিকার বাইরে যেসব নির্মাতা রয়েছেন তাঁদের এসব দেশের প্রযোজক ও পরিবেশকরা একটু ভিন্ন চোখে দেখেন কি না?
কিম কি দুক : দ্য ইজল বাণিজ্যিকভাবে খুব বেশি দেশে চালানো হয়নি। তবে চলচ্চিত্রটি অনেক দেশে প্রদর্শিত হয়েছিল। আমার পরবর্তী কাজগুলো যেমন ‘স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার... অ্যান্ড স্প্রিং’ (২০০৩), ‘থ্রি আয়রন’ (২০০৪), ‘সামারিটান গার্ল’ (২০০৪) এসব চলচ্চিত্র বিশ্বের অধিকাংশ দেশে দেখানো হয়েছে। একজন কোরিয়ান চলচ্চিত্রনির্মাতা হিসেবে আমার এই চলচ্চিত্রগুলোই বোধহয় সর্বোচ্চ যে, বিশ্বের এতগুলো দেশে দেখানো হয়েছে। আমি সত্যিই এজন্য কৃতজ্ঞ।
ইউরোপ-আমেরিকার পাঠক-দর্শকরা এমন সব উপন্যাস ও মৌলিক গল্প অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র দেখতে চান যা এর আগে কেউ দেখেনি। যখন এরকম কোনো কোরিয়ান চলচ্চিত্র পান তখনই কেবল তাঁরা তা টিকেট কেটে দেখার চিন্তা করেন এবং তাঁরা ভালোভাবেই জানেন যে, এই চলচ্চিত্রগুলো শুধু বক্স অফিসেই ঝড় তুলবে না, মঞ্চনাটক থেকে শুরু করে ডিভিডি মার্কেট সব জায়গাতেই দীর্ঘদিন ধরে টিকে থাকবে। হলিউডকে অনুসরণ করে যেসব হাস্য-রসাত্মক চলচ্চিত্র আমাদের এখানে তৈরি হয়, তাদের বিষয়টি দারুণভাবে আকর্ষণ করে। কিন্তু এই হাস্য-রসাত্মক চলচ্চিত্রগুলোর দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্ব বাজারে টিকে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমার মনে হয়, চীন ও জাপান উভয় দেশের চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেই একই ঘটনা ঘটে থাকে। আর এজন্যই হয়তো ইউরোপ ও আমেরিকার দর্শকরা আমার চলচ্চিত্রগুলোকে বেছে নেয়। তাই আমি যদি প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে এবং বিখ্যাত সব অভিনেতাদের নিয়ে হলিউডি ঘরানায় কোনো হাস্য-রসাত্মক চলচ্চিত্র নির্মাণ করি, আমার মনে হয় না তা কেউ দেখতে চাইবে। ইউরোপ, আমেরিকায় এখনো প্রচুর দর্শক আছেন, যাঁরা নতুন ও ভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। এই বিষয়টাতে আমি বেশ ঈর্ষান্বিত বোধ করি।
ই. ওজদেমির : আমরা আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে (আপনার জীবনের ঋতুগুলোকে ‘স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার... অ্যান্ড স্প্রিং’ চলচ্চিত্রে মানব প্রকৃতির বিভিন্ন পর্যায়ের উন্নয়ন হিসেবে দেখিয়েছেন) অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যদি প্রশ্ন করি, যখন আপনি চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবেন তখন আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া ঋতুর প্রতিফলনই কি চলচ্চিত্রে ঘটে?
কিম কি দুক : আমার প্রত্যেকটা চলচ্চিত্রই আমার দিনলিপি। প্রত্যেকটা চলচ্চিত্রই আমার জীবনের একটা নির্দিষ্ট সময়ের ডায়েরি। তাই আমি এটাকে মুছতেও পারি না, আবার উপেক্ষাও করতে পারি না। যখন আমি আমার অতীতকে স্মরণ করতে চাই তখন আমার চলচ্চিত্রগুলো দেখি। আমি এখন শীতকালে আছি... কিন্তু আমি জানি, শীতের পরে বসন্ত আসবে।
ই. ওজদেমির : শেষ করবো, তবে তার আগে বলতে চাই, আমরা সত্যিই আপনার নতুন চলচ্চিত্র ‘টাইম’ (২০০৬) দেখে রীতিমত বিস্মিত হয়েছি। চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমরা আপনার মুখ থেকে কিছু শুনতে চাই। যদিও আমরা এ নিয়ে বিভিন্ন জনের মতামত পড়েছি। সংক্ষেপে যদি আপনি ‘টাইম’ নিয়ে কিছু কথা বলতেন, যা আপনার দেশে এখনো দেখানো হয়নি।
কিম কি দুক : ‘টাইম’ চলচ্চিত্রটি আমাদের সাধারণ ও দৈনন্দিন জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত। আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করি যেখানে প্রতিটি সেকেন্ড, প্রতিটি দিন ও প্রতিটি বছর ফিরে ফিরে আসে। আর ‘স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার... অ্যান্ড স্প্রিং’ চলচ্চিত্রের আরেকটি সংস্করণ হলো ‘টাইম’। চলচ্চিত্রটি মানুষের শরীর ও আধ্যাত্মিকতার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে দেয়।
ই. ওজদেমির : এখন আপনার যদি কোনো কিছু যোগ করার থাকে, তা বলতে পারেন। আমরা সেটা আনন্দের সঙ্গেই এই সাক্ষাৎকারে তুলে ধরবো। আর আমরা সত্যিই আপনার কাছে কৃতজ্ঞ, এই সাক্ষাৎকার তৈরি করতে সাহায্য করার জন্য।
কিম কি দুক : আমি যখন আন্টালিয়া চলচ্চিত্র উৎসবে আপনাদের দেশে (তুরস্ক) যাই, তখন সত্যিই আমি আপনাদের দেশকে ভালোবেসে ফেলেছি। সেখানে আমার এক বৃদ্ধ চিত্রশিল্পীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। যিনি সমুদ্র তীরে পর্যটকদের ছবি এঁকে দিতেন। ওই বৃদ্ধ চিত্রশিল্পী আমাকে দেখে চিনে ফেলেন, কারণ তিনি আমার চলচ্চিত্র পছন্দ করেন। তখন আমি সত্যিই খুব বিস্মিত হয়েছিলাম। আমি আরো বেশি অবাক হয়েছিলাম, যখন ওই বৃদ্ধ চিত্রশিল্পী আমার একটা ছবি এঁকে দিলেন। আমি তুরস্কের সেইসব দর্শককে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা আমার চলচ্চিত্র পছন্দ করেন। আর মানসম্মত প্রশ্ন করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ, একই সঙ্গে আমার চলচ্চিত্র ও আমার প্রতি আগ্রহের জন্যও। সম্ভব হলে আমি আবার আপনাদের চমৎকার দেশটিতে ঘুরতে যাব, এমনটাই প্রত্যাশা।
১৩.০৩.১৬