শিল্পকলায় স্থায়ী গ্যালারি ও শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন
হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির লালন ও চর্চাকে সমুন্নত রাখতে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’। প্রতিষ্ঠার ৪২ বছর পর উদ্বোধন হলো এ প্রতিষ্ঠানের চারুকলা বিভাগের জাতীয় চিত্রশালার স্থায়ী গ্যালারি।
একই সঙ্গে এই গ্যালারির উদ্বোধন উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ১ নম্বর গ্যালারিতে ৯৬ শিল্পীর ১৪১টি চিত্রকর্ম ও ১০টি ভাস্কর্যসহ ১৫১টি শিল্পকর্ম নিয়ে শুরু হয়েছে তিন মাসব্যাপী ‘শিল্পকর্ম প্রদর্শনী’।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় এই গ্যালারি ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায়চৌধুরী, রফিকুন নবী, হাশেম খান ও সৈয়দ জাহাঙ্গীর।
প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, ‘আজকে যে গ্যালারির সূচনা হলো, সেই গ্যালারিতে ক্রমান্বয়ে আমাদের তরুণ শিল্পীদের শিল্পকর্মও ধরে রাখতে চাই। থেমে থাকতে চাই না। সম্প্রসারণ ঘটাতে চাই।’
শিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায়চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এই স্থায়ী গ্যালারি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমাদের অনেক দিনের একটা স্বপ্ন পূরণ হলো। আমরা শিল্পীরা সত্যিই আজ খুব আনন্দিত। অনেক দিন পর একটা স্থায়ী গ্যালারি পাচ্ছি।’
শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, ‘অনেক বছর পরে হলেও আজ আমরা দেশের চারু ও কারুশিল্পীরা পেতে যাচ্ছি একটা স্থায়ী গ্যালারি। এটা একটা ভালো দিক। এখন থেকে আমাদের দেশের শিল্পীদের শিল্পকর্ম সংরক্ষণের একটা স্থায়ী জায়গা পেল।’
শিল্পী হাশেম খান বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমি চারুকলা-কারুকলার জন্য স্থায়ী গ্যালারি করল, এটা ভালো। এবার এখানে, দেশের তরুণ শিল্পীদের শিল্পকর্ম সংগ্রহ করার বিশেষ ব্যবস্থা প্রয়োজন। শিল্পকর্মগুলোও সংগ্রহ করে রাখলে আমাদের ভবিষ্যৎ আরো সমৃদ্ধ হবে।’
প্রদর্শনীতে শিল্পী জয়নুল আবেদিনের চারটি, এস এম সুলতানের চারটি, সফিউদ্দিন আহমেদের চারটি, আনোয়ারুল হকের দুটি, মো. কিবরিয়ার তিনটি, আমিনুল ইসলামের দুটি, আবদুর রাজ্জাকের তিনটি, রশীদ চৌধুরীর দুটি, মুর্তজা বশীরের তিনটি, কাইয়ুম চৌধুরীর তিনটি, আবু তাহেরের দুটি, নিতুন কুন্ডুর একটি, দেবদাস চক্রবর্তীর তিনটি, হামিদুর রহমানের একটি, প্রাণেশ মণ্ডলের একটি, সৈয়দ জাহাঙ্গীরের তিনটি, রফিকুন নবীর দুটি, সমরজিৎ রায়চৌধুরীর দুটি, হাশেম খানের দুটি, মুস্তফা মনোয়ারের দুটি শিল্পকর্মসহ মোট ৯৬ শিল্পীর ১৫১টি শিল্পকর্ম রয়েছে।
প্রদর্শনী প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং সরকারি ছুটির দিন ও শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শকের জন্য খোলা থাকবে।