চলে গেলেন নোবেলজয়ী লেখক ইমরে কার্তেজ
সাহিত্যে নোবেলজয়ী প্রথম হাঙ্গেরিয়ান লেখক ইমরে কার্তেজ আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কার্তেজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী এবং নাৎসি বাহিনীর কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা কার্তেজের বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। কার্তেজের মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মাগভেতো পাবলিশিংয়ের প্রধান ক্রিজটান নেইরি। এ খবর জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পারকিনসন্স রোগে ভুগছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই বীভৎস স্মৃতি বারবার কার্তেজের লেখায় ফিরে এসেছে।
১৯২৯ সালের ৯ নভেম্বর হাঙ্গেরিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কার্তেজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কার্তেজ ছিলেন ১৪ বছরের কিশোর। ১৯৪৪ সালে হাঙ্গেরির অন্যান্য ইহুদির সঙ্গে কার্তেজও ধরা পড়েন।
তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় অচসিজ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে। সেখান থেকে পরে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বুচেনাল্ড কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে। ভয়াবহ সেই কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরেন কার্তেজ।
১৯৭৫ সালে প্রকাশিত হয় ইমরে কার্তেজের প্রথম উপন্যাস ‘ফেইটলেস’। নাৎসি বাহিনীর ক্যাম্পে থাকা কার্তেজের চাক্ষুস বর্ণনায় উঠে এসেছে এসব ক্যাম্পের অবর্ণনীয় নির্যাতনের কথা। আর এই আত্মজৈবনিক উপন্যাসটি ১৩ বছর ধরে লিখেছিলেন কার্তেজ।
২০০২ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান কার্তেজ। নোবেল বক্তৃতায় কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের ভয়াল স্মৃতি স্মরণ করে কার্তেজ বলেছিলেন, ‘আমি একসময় বাঁচার জন্য মরে গিয়েছিলাম।’
নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের দেশ হাঙ্গেরিতে লেখক হিসেবে তেমন একটা সমাদৃত বা জনপ্রিয় ছিলেন না কার্তেজ। জীবনের দীর্ঘ একটা সময় জার্মানিতে কাটিয়েছেন তিনি। তবে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর হাঙ্গেরিতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
পরবর্তী সময়ে তাঁর লেখা উপন্যাসগুলো ইংরেজিসহ বিশ্বের আরো নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে। কার্তেজের অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে ‘ডিটেক্টিভ স্টোরি’ (১৯৭৭), ‘দ্য প্যাথসিকার’ (১৯৭৭), ‘দি ইউনিয়ন জ্যাক’ (১৯৯১)।