এক টাকার শিঙাড়া!
দিনাজপুরের গুদুরী বাজারে প্রায় ২৬ বছর ধরে এক টাকায় মিলছে ‘শচীন কাকা’র শিঙাড়া। শহরের চকবাজারে নিমতলা সোনাপট্টির উত্তরে গুদুরী বাজারে এই শিঙাড়ার দোকান।
শিঙাড়ার দোকানির মা-বাবার দেওয়া নাম শচীন ঘোষ। কিন্তু শহরের ছেলে-বুড়ো সবাই তাকে চিনে ‘শচীন কাকা’ নামে। বাড়ির পাশেই একটি দোকান ঘর। সেই দোকানে ১৯৯৫ সাল থেকে এক টাকায় শিঙাড়া বিক্রি করে আসছেন রসিক এই ‘শচীন কাকা’।
শচীন ঘোষের ব্যবসা চলে সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ক্রেতাদের ভিড়ে এক প্রকার মিলনমেলা বসে যায় তার দোকানের সামনে।
এখন এক টাকার নোটের প্রচলন নেই। তবে রয়েছে এক টাকার কয়েন। বর্তমানে এক টাকায় কোনো কিছু না মিললেও তিনি এক টাকার শিঙাড়া ও নিমকি বিক্রি করে ভোক্তাসেবা দিয়ে আসছেন ২৬ বছর ধরে। ‘শচীন কাকা’ এক টাকায় শিঙাড়া ও নিমকি বিক্রি করলেও তার শিঙাড়াই বিখ্যাত।
শিঙাড়ার মূল্য কম হলেও এর বিশেষত্ব আছে বলে দাবি করেন শচীন ঘোষ। তিনি বলেন, অন্য দোকানের শিঙাড়া কিনতে গেলে পাঁচ টাকা লাগে কিন্তু আমার দোকানের শিঙাড়া এক টাকা। দাম কম হলেও এতে পেটে গ্যাসের সমস্যা যেমন হয় না, তেমনি এই শিঙাড়া চার-পাঁচ দিন রেখে দিলেও নষ্ট হয় না।
শচীন ঘোষ বলেন, আমি প্রতিদিনই নতুন তেলে ১০ হাজার পিস শিঙাড়া ও নিমকি ভাজি। ২৬ বছর ধরে এই ব্যবসা করে আসছি। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক কিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু আমি অধিক লাভের আশায় শিঙাড়ার দামের সঙ্গে আপস করিনি। আমি এক টাকায় শিঙাড়া ও নিমকি খাইয়ে রয়ে যেতে চাই দিনাজপুরবাসীর অন্তরে।
এই শিঙাড়ার কাঁচামাল হিসেবে শচীন ঘোষ আটা, ময়দা, তেল, আলু, পেঁপে, ক্যাপসিকাম, ধনেপাতা, কারিপাতা ও বিভিন্ন ধরনের মশলা ব্যবহার করেন বলে জানান। আর এই শিঙাড়া খেতে শুধু শহরেরই নয়, আসে দূর-দূরান্তের মানুষও।
ক্রেতারা জানায়, এই শিঙাড়া অনেক সুস্বাদু ও মানসম্মত। তাই বাড়ির সবাই পছন্দ করে। তারা অনেকেই এ শিঙাড়া কিনে বাড়িতে নিয়ে যায়। এতে কোনো প্রকার ভেজাল না থাকায় পেটের সমস্যা হয় না বলেও জানায় তারা।