এনটিভির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
গণমাধ্যম দুনিয়ায় ২০০৩ সালের ৩ জুলাই পদার্পণ জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির। দেখতে দেখতে ১৯ বছর পেরিয়ে ২০ বছরে পদার্পণ করেছে তরুণপ্রাণ প্রতিষ্ঠানটি।
১৯ বছর পূর্তির এই শুভক্ষণে দর্শক-শ্রোতা ও পাঠকের ভালোবাসাই প্রমাণ করে, সঠিক পথেই আছে এনটিভি। দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ঠাঁই না দিয়ে, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে ও সঠিক তথ্য সরবরাহে দৃঢ়প্রত্যয় এনটিভির।
আজ ৩ জুলাই, রোববার এনটিভির ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি ১৯তম বছর পূর্ণ করে ২০ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি এনটিভির পরিচালনা পর্ষদ, সাংবাদিক, শুভানুধ্যায়ী ও কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র কর্তৃক সংবাদক্ষেত্রে স্বাধীনতা এবং প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতাসহ চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই দেশে গণমাধ্যমের বিকাশ ও উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরাই প্রথম দেশে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চালুর অনুমোদন দিই। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ৪৫টি টেলিভিশন, ২৮টি এফএম এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও পরিচালিত হচ্ছে, যার বেশির ভাগই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অনুমোদন দিয়েছে। আমরা ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ প্রণয়ন করে এর অধিক্ষেত্রাধীন তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। ‘জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, ২০১৪’ এবং জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা, ২০১৭’ প্রণয়ন করেছি। আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে ‘ বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ স্থাপন করেছি এবং গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন-২০২২’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকদের কল্যাণে ইতোমধ্যে নবম ওয়েজবোর্ড কার্যকর করা হয়েছে। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদেরকেও ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে দেশে প্রায় ১২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, যা অনলাইন মিডিয়া, আইপিটিভি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপক প্রসারে ও তথ্যপ্রবাহে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ দেশের সম্প্রচার জগতে বিরাট সুযোগের সৃষ্টি করেছে। আমাদের দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল এখন অনেক সাশ্রয়ী খরচে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা মহাকাশে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। প্রশিক্ষিত মিডিয়া কর্মী সৃষ্টি এবং এ ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য আমরা ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিল (সংশোধন), ২০১৯’ সংসদে পাস করেছি। সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের জন্য পিআইবি’তে ( প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ) বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। আমাদের সরকার কর্তৃক ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ফলে গণমাধ্যম ক্ষেত্রে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি বিকাশ ঘটেছে।”
প্রধানমন্ত্রী যুক্ত করেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তির যুগে টেলিভিশনকে শুধু বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখলে চলবে না। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এবং দেশজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরার মাধ্যমে দেশের মানুষের উন্নত মনন গঠনে এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ নানা অপতৎপরতা দমনে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে অবদান রাখতে হবে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আজ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশের যে উত্তরণ, সেই গৌরব অর্জনে গণমাধ্যম আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযাত্রী। আমরা ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এই লক্ষ্য অর্জনে এবং গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি আরও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, এই প্রত্যাশা করি।”
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এনটিভির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।