করোনার কারণে শ্রমিক সংকট, ধান কেটে দিলেন এমপি ডিসি
সম্প্রতি সর্বত্র করোনাভাইরাসের আতঙ্ক বিরাজ করায় সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। আর তাই হাওরে হাওরে গিয়ে শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধ করতে সুনামগঞ্জের সংসদ সদস্য (এমপি), জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) ক্ষেতে গিয়ে ধান কেটে তাদের উদ্বুদ্ধ করছেন।
‘কাটলে হাওরে ধান, মিলবে সরকারি ত্রাণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ ও সদর উপজেলার ইউএনও ইয়াসমিন নাগার রুমা বিভিন্ন হাওরে গিয়ে ধান কেটে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন। সেইসঙ্গে যারা ধান কাটতে সহযোগিতা করছে তাদের সরকারি ত্রাণের আওতায় আনা হয়েছে এবং কৃষকদের সাবান,বিস্কুট ও মাস্ক দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফসল হয়েছে। কিন্তু জেলার একমাত্র বোরো ফসল শ্রমিক সংকটের জন্য কাটা সম্ভব হচ্ছে না। তার মধ্যে আর কয়েক দিন পরই শুরু হবে বৃষ্টিপাত। তাই আগাম বন্যায় যাতে ফসলের ক্ষতি না হয় তাই হাওর থেকে দ্রুত ধান কাটতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যারা ধান কাটবে এবং ধান কাটতে মাঠে গিয়ে কৃষকদের সহায়তা করবে তাদের প্রত্যেককে সরকারি ত্রাণ সহায়তার আওতায় নিয়ে আসা হবে। সেইসঙ্গে মাঠে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটতে উদ্বুদ্ধ করতে ১০ হাজার পিস সাবান, ১০ হাজার প্যাকেট বিস্কুট ও মাস্ক দেওয়ার কথাও জানানো হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি করোনা আতঙ্কে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে আর কদিন পরেই বৃষ্টিপাত শুরু হবে। এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের এবং জেলার কর্মহীন মানুষদের ধান কাটতে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। হাওরে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে ধান কাটতে সাহায্য করলে কৃষকসহ প্রত্যেককে সরকারি ত্রাণের আওতায় আনা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটতে কৃষকদের সাবান ও বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে পারে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার জেলার বিভিন্ন হাওরে গিয়ে নিজে ধান কেটে কৃষকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটতে আহ্বান জানান। এ সময় কৃষকদের গামছা ও মাস্ক তুলে দেন তিনি।
সুনামগঞ্জ ও সিলেটের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার বলেন, ‘হাওরে হাওরে পাকা ধান পড়ে আছে কিন্তু করোনা আতঙ্কে মানুষ ভয়ে হাওরে ধান কাটতে যাচ্ছে না। নিজেদের ধান যাতে নিজেরাই কেটে ঘরে আনে তাই মঙ্গলবার বিভিন্ন হাওরে গিয়ে ধান কেটেছি। আমার মনে হয়েছে এতে মানুষ যদি একটু উদ্বুদ্ধ হয়। তা না হলে কয়েক দিন পরেই বৃষ্টিপাত শুরু হবে। আগাম বন্যায় যাতে ধান তলিয়ে না যায় তাই একটু উৎসাহ দিতেই হাওরে গেছি।’