কুষ্টিয়ায় আ.লীগনেতাকে হত্যা : জাসদ নেতাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক মণ্ডলকে (৫০) গুলি করে হত্যার ঘটনায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ২০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
নিহত সিদ্দিক মণ্ডলের চাচাতো ভাই ভেড়ামারার চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এনামুল হক মণ্ডল বাদী হয়ে গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে ভেড়ামারা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে রাত ১১টা ১৫মিনিটে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর ১৮/২০২২।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, গতকাল শনিবার দুপুরে নিহত সিদ্দিক মণ্ডলের ভাই এনামুল মেম্বার বাদী হয়ে কেন্দ্রীয় জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপনকে ১ নম্বর এবং তাঁর ছোট ভাই চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সভাপতি ও চাঁদগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপনকে ২ নম্বর আসামি করে মোট ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এজাহারের কপিটি যাচাই-বাছাই করে শনিবার রাতেই মামলাটি রুজু করা হয়।
ওসি আরও বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। খুব দ্রুতই সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।’
মামলার বাদী এনামুল হক মণ্ডল বলেন, ‘আমার ভাইকে জাসদের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সিদ্দিক মণ্ডলের হত্যাকারী স্বপন ও তপনসহ সব আসামিকে অতিদ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে সন্ত্রাসীরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত এত অস্ত্র ও গুলি কোথায় পেল, সেটা খুঁজে বের করারও দাবি জানাই।’
মামলায় অভিযুক্ত জাসদ নেতা আব্দুল আলীম স্বপন বলেন, ‘এটি সামাজিক দ্বন্দ্ব। ফায়দা নেওয়ার জন্য জাসদকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। অন্যদের কথায় উৎসাহী হয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন মিথ্যা তথ্য দিয়ে এ মামলা করেছে।’
গত শুক্রবার সকালে চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মণ্ডলের ভাই বাদশা মণ্ডল পাশের চড়পাড়া মাঠে জমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন বাদশা মণ্ডলের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁর এক পায়ের রগ কেটে দেয়। খবর পেয়ে বাদশাকে উদ্ধার করতে তাঁর ভাই সিদ্দিক মণ্ডল, খালেক মণ্ডল ও ইউনুস মণ্ডলসহ বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলে গেলে প্রতিপক্ষেরা তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধসহ আহতদের উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সিদ্দিক মণ্ডলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত সিদ্দিকের আরও দুই ভাই ইউনুস মণ্ডল ও খালেক মণ্ডল গুলিবিদ্ধ হন। নিহত ও আহত ব্যক্তিরা চাঁদগ্রামের অমর মণ্ডলের ছেলে।
এদিকে, এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত শুক্রবার সিদ্দিক মণ্ডলের লাশ নিয়ে মানববন্ধন করে আওয়ামী লীগ।