ক্লাস শেষে শিক্ষককে ধন্যবাদ জানাবে শিশুরা
সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার ১২৯টি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে ধন্যবাদ জানাবে তাদের শিক্ষককে। নির্ধারিত পাঠদান শেষে প্রতি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা পালাক্রমে শিক্ষক কী পড়ালেন, সেই বিষষের ওপর তারা কী শিখল সে নিয়ে সংক্ষেপে মূল্যায়ন করবে এবং ধন্যবাদ জানাবে। এতে শিক্ষার্থীর যেমন প্রাথমিক থেকেই কথা বলার জড়তা কাটবে, সেইসঙ্গে তাদের সাহসও বৃদ্ধি পাবে। এতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে তারাই এগিয়ে থাকবে। এ ছাড়া প্রশ্ন করার মাধ্যমে শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। সেইসঙ্গে শিক্ষকরাও শ্রেণিতে পাঠদানে আগ্রহী হয়ে মানসম্মত শিক্ষাদানে ভূমিকা রাখবেন।
এভাবেই সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইসয়াসমিন নাহার রুমা।
ইয়াসমিন নাহার রুমা জানান, বছরের প্রথম থেকেই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডায়েরি দেওয়া হবে। এই ডায়েরিতে শিক্ষার্থীরা কী শিখল, কোন ক্লাসে কোন বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয়েছে, তা লিখে রাখবে। পরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তা মূল্যায়ন করবে। এ ছাড়া পুনরায় তাদের সে বিষয় স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেবেন। এতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কারো কাছে প্রাইভেট পড়তে হবে না। তারা বিদ্যালয় থেকেই সব কিছু শিখতে পারবে। পঞ্চম শ্রেণি থেকে ভালো ফলাফল করতে পারবে। তিনি আরো বলেন, ‘সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে শিক্ষকদের ওপর। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে বিষয়ের ওপর পাঠদান করবেন সেই বিষয়ে তাদের নিজেদের কতটুকু দক্ষতা রয়েছে তা জানতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে তাদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে তাদের দক্ষতা যাচাই করার জন্য। আর শিক্ষকরাও যাতে বিদ্যালয়ে নিজেরা নৈতিকতার সঙ্গে পাঠদান করান। তারা যেন নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলেন শিশুদের, এই বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এতে করে শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি পাবে।
নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা বলেন, ‘সুনামগঞ্জ শিক্ষা-দীক্ষায় অনেকটা পিছিয়েপড়া জেলা। সদর উপজেলা হওয়ার পরও এই উপজেলার অনেক ইউনিয়ন অনেকটা পিছিয়ে আছে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুণগত মান বৃদ্ধিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা এসে যেন আনন্দ পায় উল্লেখ করে নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘তাই প্রায় সব বিদ্যালয়ের শিশুদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় খেলাধুলার সরঞ্জামাদি দেওয়া হয়েছে। এবং প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করা হচ্ছে। প্রাথমিক সব বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার, লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে। এখানে তাদের বঙ্গবন্ধুর জীবনী সেইসঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানো হবে।’
গতকাল সোমবার সকালে সদর উপজেলার গবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শহরের শহরবালিকা বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইসয়াসমিন নাহার বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান ও গবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদা আক্তার প্রমুখ।