গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ বন্ধ করল ইসি
গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে পুরো নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ শাখার পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান।
এ উপনির্বাচনের ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রে সব মিলিয়ে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এ ক্যামেরার মাধ্যমে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বসে নির্বাচন মনিটরিং করেছে ইসি।
মনিটরিং করতে গিয়ে ইসি দেখল, অন্তত ৫১টি ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হচ্ছে। ফলে, কেন্দ্রগুলোর ভোট স্থগিত করে দেয় সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া আরও বেশকিছু কেন্দ্রে অনিয়মের খবর পাওয়া যায়।
এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আর সেজন্য কমিশন মনে করেছে, এ নির্বাচন অর্থহীন। কারচুপিপূর্ণ ভোট। তাই, পুরো নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেছে ইসি। এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কবে করা হবে, সে বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।’
এর আগে সিসি ক্যামেরার মনিটরিং কক্ষে বসে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আইন ভঙ্গ করে গোপন কক্ষে প্রবেশ করে অন্যের ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।’
ভোট বন্ধ করার আগে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। আপনারাও দেখতে পেয়েছেন যে গোপন কক্ষে কী হচ্ছে এবং সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন হচ্ছে না। কেন এমন হচ্ছে তা চটজলদি বলতে পারব না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ইভিএমেরও কোনো ত্রুটি দেখতে পাচ্ছি না। ওই যে মানবিক আচরণ, আরেকজন ঢুকে যাচ্ছে, দেখিয়ে দিচ্ছে।’
সিইসি বলেন, ‘এটা সুশৃঙ্খল নির্বাচনের পরিপন্থী। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারাই আইন মানছেন না তাদেরকেই আমরা ডাকাত-দুর্বৃত্ত বলতে পারি। কারণ, আইনের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সবাই যদি আইন না মানি, নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না।’
এর আগে আজ সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ বিকেল চারটা পর্যন্ত চলার কথা। কিন্তু, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই ভোট বন্ধ করল ইসি। এবারই প্রথম সব কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
এই আসনের উপনির্বাচনে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা ছিল।
গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে পাঁচ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্পধারার জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। এদের মধ্যে মাহমুদ হাসান রিপন ছাড়া সবাই একযোগে ভোট বর্জন করেন।
গত ২৩ জুলাই এই আসনের সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বীর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়।