গান-কবিতা-নাচের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জে ধর্ষণের প্রতিবাদ
‘পথে নামো, আওয়াজ তোল, অনাচার-অবিচার-নৃশংসতা রুখে দাঁড়াও’ স্লোগান নিয়ে সুনামগঞ্জে সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষার্থী-শিক্ষক, সমাজকর্মী এককাতারে এসে ধর্ষণের প্রতিবাদে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। প্রতিবাদী গান, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশন করে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলাসহ সারা দেশে ঘটে যাওয়া সব ধর্ষণের প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিবাদ জানানো হয় সব বর্বরতার। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়।
গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা থেকে সুনামগঞ্জ পৌরশহরের হোসেন বখত চত্বরে অবস্থান নিয়ে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রসেনিয়াম থিয়েটারের নাট্যকর্মী দেবাশীষ তালুকদার শুভ্রর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক সংগঠক অ্যাডভোকেট অলক ঘোষ চৌধুরী, সৃষ্টি থিয়েটারের সভাপতি সামিনা চৌধুরী মনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজিয়া হক ফারিন, আবৃত্তিশিল্পী রুবাইয়া আলতাফ নুরা, নাট্যকর্মী শাওন দাস, পৃথ্বিরাজ ঋতু, যুব ইউনিয়ন নেতা আবু তাহের, জাগরণী মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এ আহসান রাজীব প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্ধন থিয়েটারের সভাপতি নাট্যকর্মী সামির পল্লব, থিয়েটার সুনামগঞ্জের সহদলনেতা তাজকিরা হক তাজিন, সহদলনেতা সোহানুর রহমান সোহান, শিক্ষার্থী কারিশমা দেবী মনি, এআর অমিত প্রমুখ।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কবিতা আবৃত্তি করেন প্রসেনিয়াম থিয়েটারের দলনেতা সাদিকুর রহমান খান রুবেল। নৃত্য পরিবেশন করেন বৃষ্টি তালুদার। প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন আলাউর রহমান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে কোনো মেয়েই নিরাপদ নয়, যেকোনো সময় যে কেউ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়ে গেছে। সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজ কিংবা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে যে নৃশংসতা ঘটে গেছে, তাতে পুরো দেশের মানুষকে এই ঘটনাগুলো লজ্জায় ফেলে দিয়েছে এবং এর দায় কেউ এড়াতে পারে না। আর ভবিষ্যতে আরো জঘন্য ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ, অতীতের ঘটনাগুলোর যথাযথ বিচার না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। তাই এখন সময় এসেছে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করে এবং রায় কার্যকর করে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করলে তবেই ধর্ষকদের ভয় হবে এবং ভবিষ্যতে এসব নৃশংস কাজ করতে ভয় পাবে। সেইসঙ্গে নৈতিক মূল্যবোধের জায়গা সৃষ্টি করতে হবে। নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণেও এমন জঘন্য ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। সেইসঙ্গে অভিভাবকেরাও নিজের সন্তান কাদের সঙ্গে মিশে কোথায় যায়, তা খেয়াল রাখতে হবে। এতে করে ধর্ষণের ঘটনা কিছু কমতে পারে।
বক্তারা আরো বলেন, ধর্ষকেরা যে দলেরই হোক, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিয়ে তাদের ধর্ষক হিসেবেই চিহ্নিত করতে হবে। তাদের পরিচয় শুধুই ধর্ষক।