ছেলের ছাগল চুরির অভিযোগে বাবাকে আটকে নির্যাতন
নরসিংদীর মনোহরদীতে ছেলের বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগ। পরে বাবা আঙ্গুর মিয়াকে (৫০) ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে আটকে রেখে দিনভর নির্যাতন। এমন অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তার পিংকির আদালতে ভুক্তভোগীর স্ত্রী মোসা. রীমার মামলা। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার প্রধান আসামি মনোহরদীর খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার রশিদ বিপ্লব। মামলায় চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও চার থেকে পাঁচ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—খিদিরপুর ইউনিয়নের পাড়াতলী গ্রামের দুলাল মিয়া (৪৫), চর সাগরদী গ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২২), মামুন (২৭), সোহাগ (২৫) ও ফজলু (৪৫)। দুলাল মিয়া ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, কয়েক দিন আগে সাগরদী গ্রামের সোহাগের একটি ছগিল (খাসি) চুরি হয়। এ নিয়ে তারা ভুক্তভোগী আঙ্গুর মিয়ার ছেলে সাদেকুল ইসলামকে সন্দেহ করে আসছিল। গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মো. কাউছার রশিদের লোকজন বাড়িতে গিয়ে সাদেকুলকে না পেয়ে তাঁর বাবা আঙ্গুর মিয়াকে জোর করে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে সেখানে একটি কক্ষে তাঁকে দিনভর আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে পরিবারের লোকজন ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাদেরও মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো হয়। পরে রাত ৩টার দিকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের নরসিংদী জজ কোর্টের আইনজীবী মো. আল-আমিন বলেন, থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১০ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমি হাসপাতালে তাদের সঙ্গে দেখা করে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা থানায় অভিযোগ না দিয়ে আদালতে মামলা করেছে। এখন এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’