বরিশালের আগৈলঝাড়ায় স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ায় এক স্কুলছাত্রীকে (১৩) শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার (১ জুন) রাতে তাকে শিকলে বেঁধে নিজেদের ঘরের মধ্যে আটকে রাখে পরিবারের সদস্যরা।

এর আগে স্বামীর পরিবারের নির্যাতন সইতে না পেরে পালিয়ে গতকাল সকালে স্কুলছাত্রী বাবার বাড়িতে চলে আসে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।

প্রতিবেশী নুরু বাহাদুর ও জামাল তাজ জানান, দুই মাস আগে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জোর করে তাকে বিয়ে দেয়। স্বামী সাজিদ একই উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের শাহজাহান মোল্লার ছেলে। গতকাল শনিবার সকালে পালিয়ে ওই স্কুলছাত্রী বাবার বাড়িতে আসার পর মা-বাবা ও দুলাভাই মিলে শিকল ও রশি দিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। পরে এ ঘটনা টের পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। এরপর রাতে আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করতে যান। কিন্তু পুলিশ আসার খবরে তার পরিবারের সদস্যরা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।

ওই ছাত্রীর মা বলেন, ‘আমরা দরিদ্র হওয়ায় তার লেখাপড়ার খরচ বহন করতে পারছিলাম না। তাই তাকে বিয়ে দিয়ে দেই। সে স্বামীর বাড়িতে ফিরে না যাওয়ায় শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।

ওই স্কুলছাত্রীর বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাইদুল সরদারসহ এলাকার মাতব্বররা। এ বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। ওই ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।