জনগণের জীবন-সম্পত্তির নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ : মির্জা ফখরুল
জনগণের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা দিতে সরকার সামগ্রীকভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা অথবা বৌদ্ধ-খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের যাঁরা আছেন, তাঁদের যে ধর্ম-বিশ্বাস পালন, যে উপাসনালয়গুলো আছে—এগুলোরও নিরাপত্তা সরকার দিতে পারেনি। একই সঙ্গে আমাদের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী যারা আছে, ইসলাম ধর্ম যারা বিশ্বাস করে, তাদেরও এখানে কোনো নিরাপত্তা নেই।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘সম্প্রতি যে সাম্প্রদায়িক সমস্যাটা তৈরি হয়েছে, সেগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা? নেতৃত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগের ছেলেরা, নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। আজও পত্রিকায় এসেছে যে—রংপুরের যে ঘটনাটা ঘটেছে, সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছে সৈকত নামের ছাত্রলীগের এক নেতা।’
ফখরুল বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে যেহেতু সরকারের কোনো যোগাযোগ নেই। জনগণের ভোট যেহেতু সরকার পায় না, তাই জনগণের দৃষ্টিটাকে ভোটের অধিকার থেকে দৃষ্টি সরাতে তারা এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে।’
বাংলাদেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই অনির্বাচিত সরকার, অবৈধ সরকার, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তারা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করে গত দুটি টার্ম জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। ওই নির্বাচনে তখনই আমরা অংশগ্রহণ করব, যখন নির্বাচনের সত্যিকারের পরিবেশ তৈরি হবে। এবং আমরা খুব পরিষ্কার করেই বলেছি যে, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। সে জন্যেই নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচনে আমরা অবশ্যই অংশগ্রহণ করব। এবং সে জন্যই আমরা আন্দোলন করছি।’
মির্জা ফখরুল পরে হযরত শাহপরান (র.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে সুনামগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত ফজলুল হক আছপিয়ার শোক সভা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন। সেখানে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে পৌরশহরের ষোলঘরে একটি রেস্ট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এ সময় ফখরুল বলেন, ‘সহিংসতার উদ্দেশ্য হলো—সরকার জনগণের যে সমস্যা, সেই সমস্যা থেকে দৃষ্টি সড়াতে চায়। নিবার্চনকালীন সময়ে আমরা দাবি করেছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থার। সেখান থেকে দৃষ্টি সরাতে সারা দেশে যে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, সারা দেশে খুন-ধর্ষণ বেড়ে গেছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। মূলত এসব থেকে দৃষ্টি সড়াতে সরকার এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করছে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে, বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু এই আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে সাম্প্রদায়িকতাকে বন্ধ করতে।’
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহ-সভাপতি আবুল কালাম, মিজান চৌধুরী, নাদের আহমদ, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল, আনসার উদ্দিন প্রমুখ।