তুলাই নদীর পাড় কেটে মাটি ও বালি বিক্রি
সরকারের নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিরলের তুলাই নদীর খনন কাজ শেষ হতে না হতেই দুই পাড়ের মাটি কাটার মহোৎসব শুরু করেছে একটি স্বার্থেন্বেষী মহল। প্রকাশ্যে এ কাজ চললেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নির্বিকার।
উপজেলা প্রশাসন বলছে, নদী ও পাড় সংরক্ষণের দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএর। বিআইডব্লিউটির কর্মকতাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলা থেকে উৎপত্তি হয়ে বিরল উপজেলা দিয়ে ভারতের মিশেছে তুলাই নদী। এই নদীর স্রোতের ধারা এবং জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিআইডব্লিইটিএর ইতোমধ্যে এই নদীর প্রায় ৬৮ দশমিক ১৪০ কিলোমিটার খনন করেছে। নদীখননে প্রায় আট কোটি ৭২ লাখ ৫৮ হাজার ৭০৮ টাকা টাকা ব্যয় হবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা যায়।
বাস্তবায়ন কাল নভেম্বর ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২২। সবুজ পরিবেশ রক্ষায় গাছ রোপনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু নদী খননের পাঁচ মাস না যেতেই কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলায় তুলাই নদীর পাড় এবং পাড়ের পাশের মাটি ও বালির অবৈধ ব্যবসা বেশ জমে উঠেছে।
নদীর পাড় কেটে মাটি ও বালি বিক্রির খবর পেয়ে সরজমিনে উপজেলার বিপুর, বুনিয়াদপুর ও মহেশপুর এলাকার নদীর সংলগ্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, দুই কিলোমিটারের মধ্যে চার থেকে পাঁচটি স্থানে নদীর পাড় কেটে ট্রলি দিয়ে মাটি ও বালি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে।
বুনিয়াদপুর গ্রামের আতাবুরের নেতৃত্বে ডুবাপুলের দক্ষিণে প্রতি ট্রলি বালু উত্তোলনে জমা নিচ্ছেন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, আলম নিচ্ছেন ২০০ টাকা আর গোরাশহীদ হাটের দক্ষিণে ট্রলিপ্রতি ২০০ টাকা নিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ট্রাকের শ্রমিকরা জানায়।
ট্রাকের মালিকরা আবার সেই মাটি ও বালি প্রতি ট্রলি ১০০০ টাকা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় ও খাল ভরাটের কাজে সরবরাহ করছেন। সব কিছুই প্রকাশ্যে হলেও এত দিন কিছুই জানেন না স্থানীয় প্রশাসন।
বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল ওয়াজেদ বলেন, ‘এত দিন থেকে নদীর পাড় কাটছে আমি জানি না। আপনাদের কাছ থেকে জেনে পরিদর্শন করেছি। আসলে নদীখনন ও রক্ষার বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএর। আমি তাদের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।’
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট আসিক বলেন, ‘আমরাও জানতাম না এই বিষয়টি। বিরল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমার ঊর্ধ্বতনকে জানিয়েছি।’