নওগাঁয় ট্রাক্টর কেনার টাকা ছিনিয়ে শহিদুলকে হত্যা
ট্রাক্টর কেনার জন্য এক লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নওগাঁ শহরে এসেছিলেন পরিবহণ শ্রমিক শহিদুল ইসলাম। ট্রাক্টর কিনে দেওয়ার জন্য তিনি সহযোগিতা চেয়েছিলেন পূর্ব পরিচিত তিনজন পরিবহণ শ্রমিকের কাছে। কিন্তু সেই তিন ব্যক্তিই ট্রাক্টর কেনার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শহিদুলকে হত্যা করেন। পরে লাশ প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে পুকুরে ফেলে দেন।
আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শহিদুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই যুবক। আজ রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরেন নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া।
পরিবহণ শ্রমিক শহিদুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনার ৩৯ দিন পর গত শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল শনিবার আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন নওগাঁ সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা সজিব (২৩) ও দুর্গাপুর সোনাপুর গ্রামের সোহেল রানা।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, গত ১৭ এপ্রিল ট্রাক্টর কেনার জন্য নিজের জমানো টাকা নিয়ে নওগাঁ শহরে যান রাণীনগর উপজেলার ধনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ট্রাক্টর চালক শহিদুল ইসলাম। ওই দিন থেকেই তাঁর সন্ধান পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন। ১৯ এপ্রিল বাড়ির পাশে রাণীনগর উপজেলার মেরিয়া গ্রামের একটি পুকুরে ভাসমান ড্রাম থেকে শহিদুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর পরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কিন্তু শুরুর দিকে তারা এই হত্যাকাণ্ডের কোনো কূল কিনারা করতে পারছিল না। পরবর্তীতে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যানুসারে এ ঘটনার সঙ্গে গ্রেপ্তার সজিব ও সোহেল রানা এবং মান্দা উপজেলার সদরের আব্দুল জব্বারের জড়িত থাকার প্রমাণ পান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। গত শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে নওগাঁ শহরের চকদেবপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে সজিব ও সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গতকাল শনিবার গ্রেপ্তার সজিব ও সোহেল রানা আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ সুপার জানান, শহিদুলের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল ট্রাকচালক সজিব ও সোহেল রানার। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে ১৭ এপ্রিল নওগাঁয় এসে একটি ট্রাক্টর কিনে দেওয়ার জন্য সজিব ও সোহেলের কাছে সহযোগিতা চান। শহিদুলের কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য কৌশলে মান্দায় আব্দুল জব্বারের বাসায় তাঁকে নিয়ে যান সজিব ও সোহেল রানা। পরে সেখানে তাঁকে হত্যা করে লাশ প্লাস্টিকের ড্রামে ভরেন। পরদিন রাতে একটি পিকআপে করে নিয়ে ড্রামে ভরা শহিদুলের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়ির পাশে মেরিয়া গ্রামের একটি পুকুরে ফেলে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কেএমএ মামুন খান চিশতী ও সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ, রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ, নওগাঁ সদর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েলসহ পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।