নাতিকে মাদ্রাসায় ভর্তির আগেই বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের
আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা। উজির আহমেদ (৭২) নামের এক ফুচকা বিক্রেতা তাঁর মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে একটি অটোরিকশা ঠিক করছিলেন। যাচ্ছিলেন জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া নামের একটি মাদ্রাসায়। ওই সময় যাত্রীবাহী সাভার পরিবহণের একটি বাস অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। বাসের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন উজির আহমেদ। রাজধানীর কলাবাগানের গ্রিনরোড স্টাফ কোয়ার্টারের ২ নম্বর গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান আজ সোমবার সকালে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘মাথায় আঘাত পেয়ে ওই বৃদ্ধ ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তবে, সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে সাড়ে ৬টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। শুনেছি, তিনি ফুচকা বিক্রি করতেন।’
এসআই সাইদুর রহমান আরও বলেন, ‘পেছন থেকে বাসটি জোরে আঘাত করার পর অনেক দূর পর্যন্ত ওই অটোরিকশাটিকে টেনে নিয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর আমরা বাস ও অটোরিকশাটিকে জব্দ করেছি। তবে, বাসের চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাঁরা বাসটি ফেলে পালিয়ে গেছেন। একইসঙ্গে অটোরিকশার চালককেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, শুনেছি তিনিও আহত হয়েছেন। হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
নিহত উজির আহমেদের ছেলে মো. মজিদ আহমেদ বলেন, ‘আজ ভোরে বাবা গ্রিনরোড স্টাফ কোয়ার্টারের ভাড়া বাসা থেকে বের হন। আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের পাশে স্টাফ কোয়ার্টারের ২ নম্বর গেটের সামনে অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে কথা বলছিলেন তিনি। ওই সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তা পুরোপুরি ফাঁকা ছিল। আমার মাথায় আসছে না, কীভাবে বাসটি এ কাণ্ড ঘটাল। বাবার সঙ্গে আমার বোন পারভিন আহমেদ ও ভাগনে তানজির আহমেদ ছিল।’
মজিদ আহমেদ আরও বলেন, ‘রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া নামের একটি মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন বাবা, বোন ও ভাগনে। আমার ভাগনে কোরআনের হাফেজ। কী হওয়ার কথা ছিল, আর কী হয়ে গেল। ভাগনেকে আর মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে যেতে পারলেন না বাবা। এ ঘটনায় আমরা মামলা করব। কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার আউশপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আমরা। চাকরি ও ব্যবসা সূত্রে আমরা ঢাকায় থাকি।’