নানিয়ারচরে চা দোকানিকে গুলি করে হত্যা
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সুরেশ কান্তি চাকমা (৬৫) নামের এক চা দোকানি নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের রাবারবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের রাবারবাগান এলাকায় সমাজকল্যাণ যাত্রী ছাউনির পাশে নিজের চায়ের দোকানে বসা অবস্থায় রাত ৮টার দিকে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত আকস্মিক এসে সুরেশকে লক্ষ্য করে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রাথমিকভাবে তাঁর শরীরে চারটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি এবং কারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে সেই সম্পর্কেও কিছু জানাতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ওসি সাব্বির হোসেন বলেছেন, ‘আমরা লাশ উদ্ধার করে থানায় এনেছি। ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।’
ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অমলকান্তি চাকমা বলেছেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে দুর্গমতার কারণে বিস্তারিত জানতে পারিনি।’
১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকেই রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু বছর পাঁচেক আগে এই উপজেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় জনসংহতি সমিতি থেকে ভেঙে এসে নতুন সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) এবং ইউপিডিএফ থেকে ভেঙে আসা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)। সেই থেকে এলাকাছাড়া ইউপিডিএফ ও জেএসএস এই উপজেলার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া। এর মধ্যে এই দুই দলের হামলায় ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের প্রতিষ্ঠাতা ও শীর্ষ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা তাঁর পাঁচজন সহযোগীসহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন ২০১৮ সালের ৪ মে। তার একদিন আগেই ৩ মে জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাও নিহত হয়েছিলেন একই গ্রুপের হাতে। তবু উপজেলাটির নিয়ন্ত্রণ এখনো দুই আঞ্চলিক দলের বিদ্রোহ করে বেরিয়ে আসা নতুন অংশ দুটির হাতেই।