নিজ ফ্ল্যাটে পড়ে ছিল অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমানের লাশ
রাজধানীতে রাজউকের উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টের নিজ ফ্ল্যাট থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কলাম লেখক ড. তারেক শামসুর রেহমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরের দিকে তুরাগ থানা পুলিশ বাসার দরজা ভেঙে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
আজ দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলী আজম এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আলী আজম বলেন, ‘রাজউকের উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টের নিজ ফ্ল্যাটে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন ড. তারেক শামসুর রেহমান। আজ সকালে গৃহকর্মী গিয়ে দেখেন, বাসার দরজা লাগানো এবং কেউ দরজা খুলছে না। তারপর তিনি স্থানীয়দের এ খবর জানান। প্রকল্প পরিচালক মো. মোজাফফর আহমেদসহ আরও অনেকেই ঘটনাস্থলে আসেন।’
আলী আজম আরও বলেন, ‘এরপর সেখান থেকে একজন তুরাগ থানায় ফোন করে এ তথ্য জানান। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, দরজা বন্ধ। পরে ড. তারেক শামসুর রেহমানের ভাই ও বোনের সঙ্গে কথা বললাম। তাঁদের আসতে বললাম। তাঁরা জানালেন, আসবেন, কিন্তু দেরি হবে। কারণ, তাঁরা ঢাকার বাইরে আছেন। পরে বাসার দরজা ভাঙার অনুমতি দেওয়ার পর আমি দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকি।’
উপপরিদর্শক বলেন, ‘ভেতরে ঢুকেই দেখি, বাথরুমের পাশে ড. তারেক শামসুর রেহমান পড়ে আছেন। মনে হলো, বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন, বমি করেছেন, মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। বেশ অনেক সময় আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হলো। আমাদের বড় স্যারেরা ঘটনাস্থলে এসেছেন।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে জানান, জনপ্রিয় কলাম লেখক ড. তারেক শামসুর রেহমানের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তিনি নিজেও সেখানেই বেশিরভাগ সময় কাটান। দেশে এলে তিনি উত্তরার এ ফ্ল্যাটেই থাকেন।
পুলিশ ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বরাত দিয়ে এম আবদুল্লাহ বলেন, তারেক শামসুর রহমান গতকাল একাই নিজের ফ্ল্যাটে ছিলেন। তাঁর গ্রহকর্মী সকালে বাসায় গিয়ে বাইরে থেকে কলিংবেল বাজাতে থাকেন। একপর্যায়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীকে জানান। পরে বেলা ১১টার দিকে তুরাগ থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ বাসার দরজা ভেঙে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
বিএফইউজে সভাপতি বলেন, তারেক শামসুর রহমানের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে কেন যেন ড. আফতাব আহমেদ ও ড. পিয়াস করিমের কথা মনে পড়ছে। ড. আফতাব ও পিয়াস করিম দুর্দান্ত সাহসী দেশপ্রেমিক ও মেধাবী ছিলেন। আফতাব আহমেদের ঘাতকরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেল। যাদের জন্য লিখে, বলে তিনি টার্গেটে পরিণত হয়েছিলেন তারাও তাঁকে ভুলে গেছে। ড. তারেক শামসুর রেহমান দেশের পক্ষে ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অনেক লিখেছেন। মৃত্যুর নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া জরুরি।