নড়াইলে মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিতের ঘটনায় চারজন ওএসডি
নড়াইলে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যলয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক লাঞ্ছিতের ঘটনায় চার কর্মচারীকে ওএসডি করা হয়েছে। আগামীকাল তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।
গতকাল রোববার দুপুরে নড়াইল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সঙ্গে এক যৌথ সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
ওএসডি হওয়া কর্মচারিরা হলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির এনামুল ইসলাম, সহকারী নাজির বাবর আলী, সার্কিট হাউসে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. মনিরুজ্জমান ও ওমর ফারুক।
এ ঘোষণার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত দেওয়া বিভিন্ন আল্টিমেটাম স্থগিত করেন। এর মধ্যে তাঁদের দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে বিভিন্ন কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বিগত কমিটির জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম কবির, জেলা ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট এস এ মতিন, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার অ্যাডভোকেট শরীফ হুমায়ুন কবির, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হাই বিশ্বাস, নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এনামুল কবির টুকু, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের প্রকৌশলী খসরুল আলম পলাশ প্রমুখ।
গত ১০ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নড়াইল মুক্ত দিবসে আলোচনা সভার শেষ পর্যায়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিসি অফিসের কর্মচারী বাবর আলী, এনামুলের নেতৃত্বে ১০-১২ জন জেলা ডেপুটি কমান্ডার এসএ মতিন ও মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলুকে চেয়ার দিয়ে মারতে যায় এবং গালাগাল করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আয়োজনে নড়াইল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক প্রতিবাদ সভা শেষে নড়াইল-যশোর সড়ক ১৫ মিনিটের জন্য অবরোধ করা হয়। এ সময় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মচারীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা না হলে জেলা প্রশাসন বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করে আলাদাভাবে বিজয় দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এদিকে, এ ঘটনার দৃশ্য এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি ধারণ করার সময় তাঁকে লাঞ্ছিত এবং তাঁর মোবাইল ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন ডকুমেন্ট মুছে ফেলার ঘটনায় গত শনিবার সন্ধ্যায় নড়াইল প্রেসক্লাবের কার্যালয়ে ক্লাবের সভাপতি এনামুল কবির টুকুর সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় দোষী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।