পিরোজপুরে শিশুসহ স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় শিশুকন্যাসহ স্বামী ও স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের ধানীসাফা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। আজ শুক্রবার দুপুরে ওই তিনজনের ঝুলন্ত লাশ বসতঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন উপজেলা ধানীসাফা গ্রামের অটোচালক মো. আয়নাল হক (৩২), তাঁর স্ত্রী আমেনা বেগম খুকুমণি (২৬) ও তাদের শিশুকন্যা আশফিয়া (৩)। আয়নাল ভাড়ায় অটো চালিয়ে ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে থাকতেন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহত অটোচালক আয়নাল হকের আপন বড় ভাই হেলাল হাওলাদার (৮০), প্রতিবেশী চাচা মালেক হাওলাদার (৫২), চাচাত ভাই বেল্লাল হাওলাদার (৪৫) ও একই গ্রামের মাহবুব হাওলাদারকে (১৮) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
সরেজমিনে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দিন অটোচালিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন আয়নাল। রাতের খাবার খেয়ে পরিবারসহ ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে অজ্ঞাত একদল দুর্বৃত্ত ঘরের মেঝেতে সিদ কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর অটোচালক আয়নাল, তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যা করে লাশের হাত-পা বেঁধে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। ঘরের মালামাল তছনছ করে পালিয়ে যায়।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশী চাচাত বোন মহিমা খাতুন ওই বাড়িতে যায়। এ সময় সে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে দরোজায় ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায়। এরপর তিনজনের লাশ ঝুলতে দেখে সে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত আয়নালের চাচা শ্বশুর আব্দুল মান্নান (৪০) জানান, আয়নালের বাসাটি তেমন নিরাপদ ছিল না। তাই তাদের কিছু স্বর্ণালঙ্কার বাসার মালিকের স্ত্রীর কাছে গচ্ছিত রাখা ছিল। ঈদ উপলক্ষে ওই স্বর্ণালঙ্কার গত বুধবার বাসায় নিয়ে আসে। এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুজ্জামান মিলু বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে একই পরিবারের তিনজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি কোনো আত্মহত্যার ঘটনা নয়। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যার রহস্য উদঘাটনে চারটি গোয়েন্দা সংস্থা কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, খবর পেয়ে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ ঘটনার কারণ বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে চারটি বিশেষ তদন্ত দল কাজ শুরু করেছে।’