বইমেলা শুরু হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলে নতুন সিদ্ধান্ত
করোনাভাইরাসের কারণে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হবে এবারের বইমেলা। তবে বইমেলার শেষ দিন পর্যন্ত এই মেলা চলবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম খালিদ। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কঠিনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলায় প্রবেশ করতে দিতে হবে। করোনা পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয় তাহলে সরকার বইমেলা নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত দেবে।’
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বাংলা একাডমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বইমেলা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, অমর একুশে বইমেলার সদস্য সচিব অধ্যাপক জালাল আহমেদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা এনামুল কবির নির্ঝর, মোবাইলে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার তাহমিদুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘আমরা অনেক দুর্যোগের মধ্য দিয়েও বাংলা একাডেমির বইমেলার আয়োজন করছি। আগামী ১৮ মার্চ থেকে বইমেলা চালু করার প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জানিয়েছেন। আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
এ সময় সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা জাতির কাছে স্বাস্থ্যবিধির বার্তাটা পৌঁছে দিবেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘মাস্ক নেই তো বইমেলা নেই। করোনা পরিস্থিতি সামনে রেখেও আমরা বইমেলার আয়োজন করছি। এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অমর একুশে বইমেলায় আয়োজন করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘যাতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বইমেলায় প্রবেশ আসেন সবাই সেই বার্তাটা সবার কাছে পৌঁছে দিবেন।’
এবারের বইমেলার স্পন্সর করেছে বিকাশ লিমিটেড। বিকাশের জেনারেল ম্যানেজার তাহমিদুর রহমান বলেন, বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ক্যাশব্যাক পাবেন গ্রাহকরা। প্রতিবছরের মতো সারা দেশের দাতাদের কাছ থেকে নিয়ে বই সংগ্রহ করে তা উপহার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। প্রতিবন্ধী ও বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থাও করা হবে।
অমর একুশে বইমেলার সদস্য সচিব অধ্যাপক জালাল আহমেদ মেলার সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা ২০২১ উৎসর্গ করা হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি। এবারের বইমেলার মূল থিম- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।
এবারের বইমেলা ১৮ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। মেলার স্থান ১৫ লাখ স্কয়ার ফুট নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৮৩৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবারের বইমেলায় ৩৪টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও। ঝড়ের আশঙ্কায় তৈরি করা হয়েছে চারটি আশ্রয়কেন্দ্র। যেকোনো দুর্যোগ কিংবা ঝড়ের পর এক ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় বইমেলা শুরু করা যাবে বলে আশ্বস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দুই প্রান্তে দুটি খাবারের স্টল থাকবে। বেলা ৩টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে মেলা। শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।