বান্দরবানের পাঠাগার দখলের অভিযোগ আ.লীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে
বান্দরবানের থানচিতে আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার দখল করে বাসা বানানোর অভিযোগ উঠেছে।
চার বছর ধরে থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের উপরের তলায় সরকারি অর্থায়নে নির্মিত পাঠাগারের কক্ষ দুটি দখল করে রেখেছেন থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা এবং রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুইশৈথুই মারমা রনি।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, থানচি উপজেলা সদরে পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে উপজেলা আওয়ামী লীগ ভবনের উপরের তলায় নির্মাণ করা হয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের জন্য দুটি কক্ষ। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয় কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি পাঠাগার ভবনের উদ্বোধন করেন। এর মাস খানেকের মাথায় বর্তমান থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের ১টি কক্ষ এবং রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুইশৈথুই মারমা রনি আরেকটি কক্ষ দখল করে নেন।
উপজেলা চেয়ারম্যানের জন্য দোতলা একটি সরকারি বাস ভবন রয়েছে। সেটিও বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কয়েক নেতা অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের এই দুই চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারটি দখল করে নিজেরা ফ্যামিলি বাসা হিসেবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু ভবনটি মূলত আওয়ামী লীগ অফিস এবং দ্বিতীয় তলায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার। অথচ দ্বিতীয় তলায় পাঠাগারের সাইনবোর্ড থাকলেও পাঠাগারের কোনো অস্তিত্ব নেই।
অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল ধন সম্পদের মালিক বনে যাওয়ায় এই দুই নেতার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের দুর্ব্যবহারে থানচি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থোয়াইহ্লা মং মারমা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার দখলের অভিযোগটি সত্য নয়। ভবনের নিচ তলায় আওয়ামী লীগের অফিস এবং পাঠাগার দুটো পাশাপাশি সাজিয়ে উপরের তলাটি গেস্টহাউজ হিসেবে ব্যবহার করছি। উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারি বাস ভবনটিরও দূরবস্থা। তাই নিজের অফিশিয়াল কাজের জন্য এখানে থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুইশৈথুই মারমা রনির সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অংপ্রু ম্রো জানান, থানচিতে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত ভবনটি মূলত নিচে আওয়ামী লীগ অফিস এবং দ্বিতীয় তলায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের। কিন্তু পাঠাগারটি দলীয় কার্যালয়ের সাথে যুক্ত করে, উপরের পাঠাগারের কক্ষটি রেস্টহাউজ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দুজন দুটি কক্ষ ব্যবহারের জন্য ভাড়াও দিচ্ছেন।