বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাল প্রশাসন
সুনামগঞ্জে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফুল ও উপহার দিয়ে সম্মান জানানো হয়েছে।
মহান বিজয়ের মাস উপলক্ষে সুনামগঞ্জ জেলাজুড়ে প্রশাসনের উদ্যোগে এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচি উদযাপিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ আবুল হোসেনের বাড়িতে আজ শনিবার সকাল ৮টায় যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
এরপর শহীদ আবুল হোসেনের স্ত্রী রহিমা বেগমের হাতে ফুল ও উপহার তুলে দেন তাঁরা। রহিমা বেগমকে সরকারে পক্ষ থেকে একটি ঘর উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার যান দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের রফিনগর গ্রামের শহীদ নুরুল ইসলামের (নুরু) বাড়িতে। নুরুল ইসলামের শতবর্ষী মা ফুলজান বিবির হাতে ফুল ও উপহার তুলে দেন তাঁরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে জেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুল নূর বীরপ্রতীকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মেয়ে হোসনে আরাকে সম্মান জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি) মো. হারুন অর রশিদ। দিরাই উপজেলার শ্যামারচর এলাকায় গিয়ে ছয় জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাকে ফুল ও উপহার দিয়ে সম্মান জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মোকলেছুর রহমান।
এ ছাড়া সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি প্রতিনিধি দল জেলার দিরাই উপজেলায় গিয়ে গেরিলাযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের বোন ফুলু রানীকে ফুল ও উপহার দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কাকন বিবির পরিবারের সদস্যদেরও একইভাবে সম্মান জানানো হয়েছে।
আগামীকাল রোববার জেলা প্রশাসক দোয়ারাবাজার উপজেলায় গিয়ে খেতাবপ্রাপ্ত আরো দুই মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ ও আবদুল হালিমকে সম্মান জানাবেন।
এর আগে শুক্রবার জেলা প্রশাসক ফুল দিয়ে সম্মান জানিয়েছেন ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীককে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ এই উদ্যোগের বিষয়ে বলেন, ‘এই দেশ, এই পতাকা যাঁদের ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে তাঁদের ঋণ অপরিশোধ্য। মুক্তিযোদ্ধারাই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, গর্ব ও অহংকারের ধন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের সম্মান জানাচ্ছি। তাঁদের সুখ-দুঃখের কথা শুনছি। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সব সময় তাঁদের পাশে আছি। বিশেষ দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তাদের সম্মান জানাতে পেরে নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছে।’
এই উদ্যোগের ফলে নতুন প্রজন্মদের মধ্যে আরো বেশি দেশপ্রেম, দেশাত্মবোধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান বাড়াবে বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ।